। ভবিতব্য।


‘যে  ফসলের ক্ষেতে চাষীর হাতে ছিলো চিরস্থায়ী লক্ষ্মীর বাস তার ঘরে উপকারের ছলে ঢুকিয়েছি মাটির ধর্ষক অরগানোফসফরাস।
যে কুমোরের সংসার চলতো  মাটির কলসি কুঁজো ভাঁড়ে
তার চাকা থামিয়েছি থার্মোকলের গেলাসবাটির অত্যাচারে।
প্লাস্টিক মেলামিনের অজর অমর বাসন এসে গেছে নিমন্ত্রণের পাতে,
শালপাতাকে বহুদিন ব্রাত্য করেছি আধুনিকতার অজুহাতে।
পাটের ব্যাগেরা যে কোথায় নির্বাসনে গেছে, সেটা সময়ও ভুলে গেছে,
প্লাস্টিকের প্যাকেটের সার্জিকাল স্ট্রাইকে অগুন্তি  চট ও কাগজের কবেই  মৃত্যু ঘটেছে।’


এই সব চর্বিতচর্বন আর কতবার করে পরিবেশ দিবস এলেই চেবাবো, কে জানে!
দুচারটে গালভরা কথা দিয়ে লেকচার সেরে, সকলেই ফিরে যাবো ঠিক সেইখানে,
যেখানে প্রতি পয়োনালী প্লাস্টিকে বুজে এসেছে, যেখানে ফল থেকে জল ভেজাল সবেতে,
আমারই কোনো সহনাগরিক মুনাফার জন্য যেখানে ভাগাড়ের মাংস বাধ্য করেন খেতে।


যখন প্রতিমার রঙের সিসে গলে নদীতে মিশে যায় ভাসানের নাচের তালে তালে,
বাজির ধোঁয়া ও সালফার আমাদের ফুসফুসে কামড় বসায় উৎসবের আড়ালে,
যখন সুযোগী কুঠারে নাগরিক মহীরূহদের হত্যা করে বানাচ্ছি
সুরম্য ইঁটকারাগার,
পুকুরের পর পুকুর  বুজিয়ে ফ্ল্যাটবাড়ি হলেও টনক নড়েনা কোনো পুরসভার,
তখন হে আমার ছেচল্লিশ জিনের হোমো স্যাপিয়েন্স ভ্রাতা ও ভগিনীগণ,
পরিবেশ দিবসের এই আদিখ্যেতা কোনোভাবেই আটকাবেনা আমাদের সহমরণ।


নদীর শেষ মাছটি মরে ভেসে উঠলে, ফসলের শেষ কণাটি নষ্ট হলে কীটনাশকে
অনন্ত ধনরাশির ওপরে বসে থাকা পৃথিবীর শেষ মানুষটা তখন হয়তো বলে উঠবে,
‘ হায়রে টাকা, খাওয়াই যায় না তোকে!’


আর্যতীর্থ