। বিদূষকের মৃত্যু।


রাজার সভায় অনেক আসন কত রকম রঙ
মন্ত্রী কোটাল সেনাপতি , পাত্র মিত্র সং।
শেষোক্তজন রাজসভাতে অতি আবশ্যক,
প্রজা যখন ওঠেন খেপে বাঁচান বিদূষক।


সমস্যা এই , রাজা মশাই আদতে রঙকানা,
সাকুল্যেতে বর্ণ চেনেন মোটে সে একখানা।
কি রঙ সেটা গুপ্ত থাকুক,  চারদিকেতে চর,
রাজার কানে খবর গেলে বিপদ ভয়ঙ্কর।


যা হোক, এবার গল্প শোনো, একবর্ণ রাজার
( আজকাল তো যাপন জুড়ে মনোক্রোমের বাজার)
মেজাজ শরিফ থাকলে পরে রাজামশাই ভালো
সমস্যা ওই অন্যরঙে, দেখেন সেটা কালো।


কালো আবার মহারাজের দুটো চোখের বিষ
দেখলে পরেই রঙ মেটানোয় হাত দুটো নিশপিশ
মন্ত্রী এটা জানেন ভালো, জানেন সেনাপতি,
পাত্র মিত্র সবার এখন একই রঙে মতি।


ঝামেলাটা পাকিয়ে দিলো ওই ব্যাটা জোকার
নানান রঙে ছুপিয়ে চলে নিত্য পোশাক তার
মাঝে মাঝে রাজার সাথে রঙ মিলে যায় বটে
বাকি দিনের রঙবাহারে রাজসভা যায় চটে।


সভাসদরা বোঝায় তাকে ওহে অচল ভাঁড়,
জানো না কি কোন বর্ণ পছন্দ রাজার?
বিদূষকটা পাগলাটে আর কেমন কেমন জানি,
নানান রঙকে মিশিয়ে পোশাক পরবে প্রতিদিনই।


সহ্য করেন রাজা বলো এসব কেমন করে?
হুকুম করেন , আন তো দেখি ভাঁড় ব্যাটাকে ধরে!
অমনি এলো  ছুটে হাজার বশংবদ রাজপেয়াদা
বিদূষককে পাকড়ে হলো আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা।


ধমক দিয়ে রাজা বলেন এত দুঃসাহস!
রাজসভাতে থেকে তবু রাজার রঙের নোস!
এখন থেকে আমার রঙের পরবি পোশাক ব্যাটা!
শোনেই না সে পাগলা জোকার, এমনি সে লোক ঠ্যাঁটা।


কাজেই রাজা সভার সাথে করেন গোপন শলা,
গুপ্তঘাতক কাটলো শেষে বিদূষকের গলা।
রাজা চাপা গলায় বলেন বাঁচলো এবার দেশ,
চাইলে প্রজা তোমরা ধোরো জোকার ছদ্মবেশ।


তখন থেকেই রাজামশাই সুখেই আছেন ভারী,
পছন্দসই রঙের প্রলেপ গোটা সভাটারই।
বিদূষকের নাম বলিনি,( আচ্ছা ভুলো মন তো!)
চুপিচুপি বলে রাখি , নামটি ‘ গণতন্ত্র’।


আর্যতীর্থ