। বীরপুরুষ।


ছোটবেলার থেকে সবাই ভীতু বলেই জানে
প্রমানটা তার ছড়িয়ে আছে জীবনে সবখানে।
ঝগড়া করা দূরের কথা, কথাও  কই না জোরে
হকের জিনিস যে কেউ কাড়ে দুটো চাপড় মেরে।
গোবেচারি নিরীহ লোক, শান্তি পেলেই খুশ
মুখের ওপর পাড়ার লোকে বলছে কাপুরুষ।
এমন লোকের পড়বি প্রেমে তাও আবার হয়
বরং দেখিস নিচু চোখেই, বন্ধুরা তাই কয়।
সহজে কি মন পাবো তোর বড্ড যে তুই জেদি
ঘরের সামনে শতেকখানেক প্রেমের শহীদবেদী
কন্যা রে তোর দেমাক ভারী দেখতে সরল মুখে
দ্যাখনা  আমার মন পুড়ছে ধিকি ধিকি বুকে।


ঘর তো চিনি কন্যা রে তোর মনের সাকিন কই পাবো?
চোখের ঝিলে ডুবলে এ মন আর কি আমি থই পাবো?


হত যদি রূপকথা এ,লুকিয়ে থাকতি অচিন গাঁয়ে
আমি তখন ভাগ্য খুঁজি, ভাসছি ময়ূরপঙ্খী নায়ে।
তোর ঘাটেতে নোঙর ফেলে ঘুরছি গাঁয়ের পথে
বিঁধলি আমায় হরিণচোখে , বাঁচি কোনোমতে।
ব্যাঙ্গমী আর ব্যঙ্গমাকে লাগিয়ে দিতাম কাজে
তোকে নিয়ে দেখতে আকাশ উড়ি পক্ষীরাজে।
ভাবি কত আকাশকুসুম গাছের তলায় একা
একটু বাদেই অফিসছুটি, তখন পাবো দেখা।


আজকে কিন্তু রোজের রুটিন হোঁচট খেয়ে এলোমেলো,
এত্ত দেরী করলি রে মেয়ে, পথে আঁধার নেমে এলো।


হঠাৎ একি! দেখি তোকে আলুথালু রাস্তা দিয়ে ছুট
তিনটে বাইক পেছন পেছন, করতে তোকে লুঠ।
সন্ধ্যাবেলার নিঝুম পথে একলা চলার ভুলে
তিন অমানুষ ঠিক করেছে নেবেই তোকে তুলে।
কোত্থেকে যে হঠাৎ প্রবল শক্তি এল মনে
একের পর এক আধলা তুলে ছুড়লাম প্রাণপণে।
বাইকগুলো তোকে ছেড়ে আমার দিকে এলো
গরম সিসে ফুঁড়লো শরীর, নামলো চোখে কালো।
জ্ঞান ফিরতে হাসপাতালে আবছা ছায়ার চোখে
হরিণচোখে জল ভরেছে,  দেখতে পেলাম তোকে।
কানের কাছে মুখ নামালি, আবার গেলো হুঁস,
আলতো করে বললি যখন ' খুব যে বীরপুরুষ'!


আর্যতীর্থ