। ব্র্যান্ড।


ভরসা বেঁধেছে বাসা  ব্র্যান্ডের ভ্যালুতে
ছাপ্পা খুঁজছে লোকে গাড়ি থেকে আলুতে
শার্ট প্যান্ট শাড়ি স্যুট গেঞ্জি বা জাঙ্গিয়া
সক্কলে চিন্তিত কোন ব্র্যান্ড তা নিয়া।
গোঁফছাঁটা চুলকাটা হতে হবে হাবিবই
(পাড়ার নাপিতে কেন প্রেস্টিজে ঘা দিবি?)
বাজার করতে ছোটো স্পেনসার মেট্রো
স্থানীয় বাজারে যাওয়া? Awfully retro!
ভালো ফল চেনা চায় এঁটে থাকা স্টিকারে
(আঠা গায়ে লেগে গেলে পুষ্টিও কি বাড়ে?)
ওলা বা উবের ছেড়ে ট্যাক্সিতে যায় কেউ?
জীবনের সবকোণে পৌঁছেছে ব্র্যান্ড ঢেউ।
এমন কি ডাক্তারও দেখাই না পাড়াতে,
বড় বড় নাম খুঁজে যাই রোগ সারাতে।
মোটমাট হয়ে গেছি ব্র্যান্ডগেমে চোস্ত
ব্র্যান্ড দেখে তবে কিনি শ্যাম্পু বা পোস্ত।


সমস্যা একটাই মাঝে মাঝে মনে হয়,
এসবে হয়না আর পরিচয় বিনিময়।
আমাকে চিনতো মুদি , নাপিত ও দর্জি
ডাক্তারও বলতেন ‘ তোর ধাত সর্দির’।
স্টাইল করতে গেলে ধমকাতো নাপিতে,
‘এইসব ছাঁট দিলে বলে দেবো বাপিকে!’
দর্জিকাকুও পথে দেখা হলে হাসতো
‘জামার ছিটটা দিও, মাপ তো মুখস্থ!’
বাবা যে বাইরে গেছে মুদিজেঠু জানতো
সেসময় মা সব বাকিতেই আনতো।
বাজারে গেলেই বাবা দেরী করে ফিরতো
মা’র কাছে অজুহাত ‘ খুব ছিলো ভিড় গো।
সেই গুল শুনে মা হেসে যেতো অল্প
বাজারুরা সব্বাই দিতো এই গল্প।
আসল ব্যাপার ছিলো আড্ডাটি জোরদার
বাকি সব বাজারুরা, এবং দোকানদার।
ডাক্তারও রাখতেন রোগীদের সংবাদ
( ইদানিং মারপিটে ওই সব ঢং বাদ)।


এখন হাস্যমুখে কথা কয় সেলসম্যান
কি কি অফার আছে, সেইটাই ধ্যানজ্ঞান।
ডাক্তার কে আছেন, জানবো তা কি করে,
আমরা তো নাম জানি মেডিকা বা ভেলোরের।
প্রতিবার গিয়ে দেখি বদলেছে মুখ সব,
ব্র্যান্ডনেমে পরিষেবা চলছে নিঁখুত সব।
ব্যক্তিরা বড় হোক, কোনো ব্র্যান্ড চায়না,
পরিচয়হীনতাই এযুগের আয়না।
পাওনা কতটা হলো জীবনের ভান্ডে,
সেইসব ভুলে গিয়ে মন দাও ব্র্যান্ডে।


আর্যতীর্থ