। একা।


তুমি ভেবেছো ওদের হ্যাঁয়ে হ্যাঁ মিলিয়ে তুমি নিরাপদ।
তুমি ভাবছো ওদের না’য়ের গন্ডীর লক্ষ্মণরেখা পার করোনি বলে ওরা তোমাকে ওদের দলে নিয়েছে।
ওরা যখন তোমার সহকর্মীকে বেধড়ক মারলো,
তার আর্তনাদ কান বেয়ে তোমার মগজে পৌঁছায়নি।
পড়শীর মেয়েটির বলাৎকার এবং তৎপরবর্তী বিচারের প্রহসনে আত্মহত্যা তোমায় বিচলিত করেনি।
কেনই বা করবে? সহকর্মী বা পড়শী যে ‘ ওদের’ বিরুদ্ধে ছিলো, অন্তত তেমনটাই এসেছে তোমার কানে।
তোমার কি দায় নাকি গোটা দুনিয়ার কোথায় কি ঘটে চলেছে তা সামলাবার?
কে সাবধানী হবে আর কে বেফাঁস বলে চোরাবালি খুঁজে নেবে সেটা তো তাদের ব্যাপার!
তাছাড়া, তুমি তো গেছো হাসপাতালে শ্মশানে, পড়শী ও বন্ধু হিসেবে কর্তব্য করেছো ,
অবিকল যেমনটি লেখা থাকে বইয়ে, মানে ‘কপিবুক’।
তার বেশি বলেকয়ে বিরাগভাজন হবে, তোমার তো নেই বাপু মাথার অসুখ!


আজকে , হঠাৎ তুমি চমকে উঠেছো মাঝরাতে।
চমকে উঠেছো , কারণ তোমার উঠোনে ভারী বুটের শব্দ,
তোমার দরজার কড়া কারা যেন অহেতুক জোরে জোরে নাড়াচ্ছে।
খড়খড়ির ফাঁক দিয়ে তুমি দেখছো, যে ভিড়টা তোমার বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছে,
তাতে সহকর্মী পেটানো গুন্ডা আর পড়শিনী ধর্ষক একাকার হয়ে আছে।
ওরা এসেছে। ওরা এসেছে আজ তোমার জন্য, তোমার বউ মেয়ের জন্য,
তোমার আজন্মকাল ‘বাড়ি’ বলে ভাবা আস্তানাটি দখলের জন্য।


তোমার না আছে সহকর্মী, না আছে পড়শী, আজ তুমি একেবারে একা।
ওই শোনো, ওরা আবার কড়া নাড়ছে, শুরু হচ্ছে তোমার দরজা ভাঙার আয়োজন...


আর্যতীর্থ