। ঘাটতি।


‘দেখো রাই, কেটেকুটে হাতে আছে নব্বই,
এইবারে ঠিকঠাক বাজেটিং করবোই।
প্রতিবারই হয়ে যাই মাসশেষে নিঃস্ব,
ফক্কা পকেট আহা করুণ সে দৃশ্য,
এইবারে এসো দেখি , বসে যাই হিসেবে,
এখন থেকেই দেখি কোন খাতে কি দেবে।’


‘ওব্বাবা! কোনদিকে উদয় গো সূর্যর?
যুদ্ধের মতো করো হিসেবের তোড়জোড়!
বাড়ি আর গাড়িটার বাকি আছে কিস্তি,
মেয়েদের টিউশানি, আর স্কুল ফিসটি,
দিতে হবে প্রিমিয়াম ,বীমা চলে কতিপয়,
ড্রাইভার মাসী নিয়ে মাইনেও গুটি ছয়,
এরপরে বাঁচাকুঁচো যা পড়ে থাকবে,
সেটাতেই বাকি সব, সেটা মনে রাখবে।’


‘এমন বলছো যেন এইসব জানা নেই,
চোখ বুজে থাকি বটে, তাইবলে কানা নই।
গাড়ি আর বাড়িতেই চলে যাবে চল্লিশ,
কুড়ি নিয়ে যাবে ধরো টিউশন স্কুল ফিস।
প্রিমিয়াম মাইনেতে আরো যাবে আঠারো,
এবাব্বা! হাতে আর আছে পড়ে যে বারো!
বাজার হাজার করে ধরো যদি হপ্তায়,
মুদি ইত্যাদিতেও আরও হাজার যায়।
পড়ে আছে তারপরে মোটে আর 4 K,
ওগো রাই! হিসেব যে চলে যায় হড়কে!
সামলাও কি করে তুমি প্রতি মাসে যে,
পকেটের হাল দেখে চোখে জল আসে যে!’


‘ধ্যাত্তেরি, তুমি এত কাঁচা কেন হিসেবে,
বিয়ের ভুলটা আমি করলাম কি ভেবে!
রোজ এত মন দাও খবরের কাগজে,
বোঝো নি বাজেট পড়ে গাড়লেও যা বোঝে,
আরামসে লেখো তুমি করবে কি খরচা
সখ আহ্লাদ খুঁজে লেখো তার কড়চা,
থাকলে থাকুক না চারহাজার পকেটে,
ইচ্ছেকে সুখ দাও চারলাখী বাজেটে।
রেস্তোরা ,আউটিং,যা কিছু করবে,
সব কিছু খুল্লম বাজেটেতে ধরবে।’


‘সেকি রাই, আজগুবি কথা এত কহ যে,
এসব লিখলো কবে খবরের কাগজে?
গুল লিখে দিই সব, সেটা তুমি চাও কি?
কাঁচকলা জ্বাল দিলে বনবে পোলাও কি?
কোথা থেকে পেলে বলো এরকম চিন্তা?
ফুটোকড়ি নিয়ে কেন নেচে যাবো ধিন তা?
তোমার রকম দেখে মন খায় খাবি তো,
পাগল হয়েছো নাকি, সেটা নিয়ে ভাবিত।’


‘নেকুপুষু, বাজেটটা দেখো সব রাজ্যে,
আমদানি কত সেটা কারো নেই গ্রাহ্যে।
হ্যান দেবো ত্যান দেবো বলে বাজে ঢক্কা,
কোথা থেকে দেবে শুনি? কোষাগার ফক্কা।
তাতে কি থামছে নাকি প্রকল্প ঘোষণা?
তখন তো কই বাপু ঘিলু নিয়ে হাসোনা!
এই দেশে আশ্বাস মিলে যায় ঝটতি,
চাইতে গেলেই শুনি ‘ বাজেটের ঘাটতি’।’


‘বেশ তবে তাই করি, চারহাজার পকেটে,
জীবন চলতে থাক ঘাটতির বাজেটে।’


আর্যতীর্থ