।কাঁটার মুকুট।


ওরা হাতে ছুরি  নিয়ে দাঁড়িয়ে, পিঠে বাঁধা কালাসনিকভ।
সামনে হাঁটু গেড়ে সারি দিয়ে নতশির হতভাগ্য কিছু,
আরো কিছু দূরে ক্যামেরা ফোকাস করে ধরে রাখে সব।
শুধু চোখ দেখা মুখ হুংকার দেয় ,’ আল্লাহ হো আকবর’
ওপরে শকুন ওড়ে, সন্ধানী চোখ, তার কাছে ভারী প্রিয় শব-উৎসব।


যুবককে পিছমোড়া করে বেঁধে উল্লাসে ফেটে পড়ে গ্রাম।
হয়তো করেছে চুরি, কিংবা করেনি সে, কি আসে যায় তাতে,
বিনাবাধা বিধর্মী বেধড়ক পিটিয়ে হয় প্রাণের আরাম।
হত্যার অজুহাত হিসেবে ঈশ্বরের ধারেকাছে আর কিছু নেই,
রক্তাক্ত অন্তিম শ্বাসের তালে তালে ধ্বনি ওঠে ‘ জ্যায় শ্রীরাম!’


পৃথিবীর খুব কাছাকাছি, উথালপাথাল অগুন্তি মানুষের মাঝে,
আল্লাহ ও রামচন্দ্র বিষণ্ণ ধারাপাতে ক্ষতির হিসেব রাখেন।
শিউড়ে ওঠেন তাঁরা বিরামবিহীন রক্তের ঢেউয়ের আওয়াজে,
মানুষের অভিধানে ভক্তি আর হিংস্রতা সমার্থক দেখে
তাঁরা খোঁজেন কোথায় ভুল, কবে থেকে নরবলি চালু হলো উপাসনা কাজে।


দুহাজার বছর আগে নিহত জেরুজালেমের যুবক সব দেখে ফিসফিস বলেন অস্ফুটে,


‘ সমস্ত ঈশ্বরের জেনে রাখা ভালো, মানুষ সাজাবে তাঁকে ক্রুশে আর কাঁটার মুকুটে।’


আর্যতীর্থ