।কর্ণ।


রথের চাকা যুদ্ধের সময় বসে যাবে আমি আগেই জানি তা।
এও জানতাম, আমার তাবত আয়ুধ কেড়ে নেওয়া হবে পুরোনো হিসেব মেটাতে।
আমার শত্রুর হাতে রোজ খুন হয়ে দিকে দিকে জ্বলে ওঠে ভাইয়েদের চিতা,
তাবত কাজের সাফাই হিসেবে স্বয়ং শাসক রয়েছেন তার হাতে।


সূর্যের আদিমতায় জন্ম হয়েও রাষ্ট্রের কাছে আমি আজ অন্ত্যজ।
অরণ্য পর্বত নদী উপত্যকার নামে আমি বহুবার চেয়েছি আমার অধিকার।
ওরা দেয়নি। অপ্রাপ্য অপমানের ক্রোধে জীবন জ্বালিয়ে আমি নিজেকেই বলেছি ‘ পরিচয় খোঁজো।’
ওরা আমাকে বিদ্রোহীর তকমা দিয়ে যুদ্ধ করতে বাধ্য করেছে বারবার।


আমার পেছনে অযুত গাছের দল হেরো কৌরবসেনার মতো দাঁড়িয়ে আছে ঠায়।
এদিকে ওদিকে ছিটিয়ে আমার সঙ্গীদের লাশ, পান্ডবপক্ষের বুলেটে ক্ষতবিক্ষত।
আমার অস্ত্র নেই,  অজস্র অর্জুন কারবাইন উঁচিয়ে ক্রমেই ঘিরে ধরেছে আমায়,
তাদের লক্ষ্য স্থির, আমার কবচকুন্ডলহীন দেহ ঝাঁঝরা করবে বলে আঙুল ট্রিগারে উদ্যত।


এ যুদ্ধে জয় নেই, সেটা জেনেই যুদ্ধে নেমেছি, সুতরাং মৃত্যুতে নেই আফশোষ।
প্রথম কার্তুজটা হৃৎপিণ্ড ফোঁড়ার আগে একবারই শুধু চেঁচিয়ে উঠলাম ,
‘ অর্জুন, তোরা সক্কলে কিন্তু আমার ভাই হোস!’


আর্যতীর্থ