। ক্ষিদে।


ক্ষিদে। সব রং খেয়ে ফেলা কালো কালো খিদে।
ঘর খাই বাড়ি খাই বাঁচার তাগিদে।
ভুখা পেটে ধিকি ধিকি তুষের আগুন,
ফ্যান দাওওওওওওও.. সাথে শুধু একছিটে নুন,
বিনিময়ে ভোগ করো যেমন সুবিধে। ক্ষিদে.....


ওরা কারা? অবয়বহীন কিছু মানুষের দল,
ঘরবাড়ি কিছু নেই, ক্ষিদেরা প্রবল।
এককালে ছিলো দেশ, পাড়া ও উঠান,
গোলা ভরে ধান ছিলো, বুকভরা গান।
পড়শী ঝগড়া ছিলো ,প্রেম খুনসুটি,
কাজ ছিলো হাতে , আর মাঝে মাঝে ছুটি।
আজ নেই , কিছু নেই, রাজা ও ফকির,
এক সাথে পথ চলা ক্ষিদেদের ভিড়।
ওরা শুধু বেঁচে আছে বাঁচার তাগিদে,
চাল নেই, চুলো নেই, মানুষী বাসনা নেই,
পেট জুড়ে পড়ে আছে একরাশ ক্ষিদে।


কোথা থেকে এলো ওরা?
ক্ষিদেসর্বস্ব ওই নামহীন শরীরেরা
এলো কোথা থেকে?
কখনো মানুষ ছিলো ওরা প্রত্যেকে।
পার হয়ে এসে গেছে দেশভাগ রেখা,
ওদের কপালে লেখা
ধর্মের ছ্যাঁকা দেওয়া অযুত কাহিনী,
স্রেফ ঈশ্বরদোষে অবিরাম মূল খোঁজে ক্ষিদের বাহিনী।
কালো রাস্তায় ওরা হাঁটছে দুনিয়াময়,
ইহুদী ,রোহিঙ্গিয়া , হিন্দু বা শিখ নয়,
ইয়াজিদি, বোহরা , পারসি আরবিক নয়,
একটাই পরিচয়, ওরা মরে বারবার একনামে বিঁধে।
ক্ষিদে।


হে আমার পেটভরা মানুষের দল,
আপনি কোপনি নিয়ে রোজ কোন্দল,
ভাগ্যের মারপ্যাঁচ নয় খুব সিধে,
সামলিও ঘরদোর, গলি ও পাড়ার মোড়,
আঁকড়িয়ে ধরে রেখো শান্তির জিদে
অনর্থ ঘটে গেলে হঠাৎ দেখতে পাবে
তোমাদের চারধারে ওত পেতে ঘিরে ধরে
নিকষ বর্ণহীন ,সব শুঁষে নেওয়া এক
জমাট আঁধার। ক্ষিদে।


আর্যতীর্থ