। কোজাগরী।


জেগে আছে কৃষকের বউ, শূন্যতা নিয়ে দুই চোখে,
বর কেন ফলিডল খেলো, তোমরা বোঝাও কেউ ওকে।
ফসল যা হয়েছিলো ক্ষেতে, সস্তাতে বেচে হলো দিতে,
আধাসাল ঘামের মজুরি, ফড়ে কেনে মোটামুটি ফ্রী-তে।
হাহাকারে জেগে আছে মাটি, হারিয়েছে সেও তার পিতা,
আরো চাষী খেতে পাবে বলে, জাগরুক কবর আর চিতা..


জাগা আছে নিঁখোজ বালিকা, বিক্রি যে ঘন্টা হিসেবে
কোন ঘর স্মৃতি নিয়ে জাগে, লাভ নেই সেই কথা ভেবে।
সেই কবে স্কুলছাত্রীটি, প্রেম করে গেলো ঠকে ডাহা,
মিসিং ডাইরি মুছে গেছে, এফ আই আরে হয়নি সুরাহা।
মনহীন হাতে হাতে ঘুরে, এখন সে শরীর কেবলই,
বিষাদের ঝাঁপি বুকে চেপে ,রাত জাগে লাল-আলো গলি..


টেট পাশ তরুণীও জেগে, বুড়ো বাপ রাতভর কাশে,
চাকরির অধরা মাধুরী, আটকেছে  লাল ফিতে ফাঁসে।
প্রেমিকেরও সেই এক দশা, টিউশনে খুদকুঁড়ো জোটে,
আগামীর গায়ে কালসিটে, না পাওয়ার ক্রমিক হোঁচটে।
বাকিরা ঘুমের দেশে গেছে, তার তবু আলো জ্বলে ঘরে,
এ আঁধার চিরজীবি হবে, ভেবে তার ভারী ভয় করে...


জেগে আছে হোমের কিশোরী, গর্ভিনী পথ-পাগলীটি,
আবাসে বৃদ্ধা দেখে চাঁদ, আজও নেই কাঙ্খিত চিঠি।
জেগে আছে গণধর্ষিতা, উকিলের জেরা-তির বিঁধে,
ডাস্টবিনে জাতিকাও জাগা, শুধু শ্বাস নিয়ে যাওয়া জিদে।
হে চাঁদ, প্রশ্ন কোরো না, কার বাড়ি কে জেগে আছে,
কত নারী বিষাদযাপনে, ঘুমহীন রাত নিয়ে বাঁচে..


লক্ষ্মীকে ও পথে নিও না, লজ্জায় পড়ে যান পাছে।


আর্যতীর্থ