। মূর্তিভাঙারুকে খোলা চিঠি।


মূর্তিভগ্নকারী দুর্জন মহোদয় সমীপেষু,

আপনাদের রাগের গনগনে আঁচে বেশ কিছু মূর্তি আরো নড়বড়ে হবে।
সেটা কোথায় এবং কবে, সেখবর যথাসময়ে মিডিয়া  মারফত আমাদার কানে পৌঁছাবে।
অন্তত এই ব্যাপারে ব্রেকিং নিউজ কথাটা আক্ষরিক অর্থে সত্যি, বলুন?
ওহ হো, আপনারা  এখন তো হেব্বি আগুন, এসব ফালতু রসিকতায় আমাকেই বেমক্কা করতে পারেন খুন।
অন্তত এইভাবে যাওয়ার মোটে ইচ্ছে নেই,
আরও চটে যাবার আগেই তাই আমার সামান্য প্রস্তাবটা দিয়ে দেই।
বলছিলাম কি, আপনাদের এই মূর্তি আক্রমণের একটা অন্য দিক আছে,
দেশের আনাচে কানাচে কোথায় মূ্র্তি হয়ে কারা কারা বাঁচে,
তাই জানতে পারছি।
বিশ্বাস করুন, পেরিয়ার বলতে কেরালায় একটা জঙ্গল ভাবতাম এতদিন।
যাঁর স্বপ্ন ছিলো দেশ হোক জাতপাতহীন, আপনারা মূর্তি না ভাঙলে তিনি হয়ে থাকতেন গুগলে বিলীন।
শ্যামাপ্রসাদকেও ওই একরঙা পোস্টট্রুথে ঢেকে ফেলেছিলাম। আপনাদের দৌলতে আবার পড়লাম,
স্বপ্নদর্শী মহামানবকে রামের আড়াল থেকে বের করে নতুন করে করলাম প্রণাম।
লেনিনকেও তো দিয়েছিলাম বিস্মৃতিতে ঠেলে,
তাঁর মূর্তিকে ফেলে আপনারা দিলেন আবার জানার আগ্রহকে জ্বেলে,
এজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। ওহে হাতুড়িউদ্যত গুন্ডামশাই, আপনার থেকে এইবারে আরও কিছু চাই।
কোণায় কোণায় লুকিয়ে থাকা, পার্কে কাকের গুয়ে ঢাকা পথিকৃতদের  
এভাবেই খুঁজে বার করুক আপনাদের বিভেদী পতাকা।
আপনাদের নানারঙা ভুয়ো অপপ্রচারে, ইতিহাস ক্রমেই যাচ্ছে আরো অন্ধকারে,
অন্তত এই সুযোগে অপসৃত আলোরা আবার স্বস্থানে ফিরতে পারে।
শুধু একটাই অনুরোধ, আপনাদের তো রঙের সাথে বিরোধ, শিল্পের ওপর ধ্বংসের ক্রোধ নাই বা ফলালেন।
প্রতিটি মূর্তি তার ভাষ্করের অনন্য প্রয়াস, অমনভাবে তার সর্বনাশ করলে সেটা বস্তুত শিল্পসন্ত্রাস।
একটু কালিটালি দিয়ে গায়ের ঝাল মেটান নাহয়, সবকিছু নয়ছয় করে ফেলা ভোটের পক্ষে ভালো কথা নয়।
আপনাদের দৌলতে এমনিতেই দেশের সম্ভ্রমে বড় বড় গর্ত, এই সামান্য শর্তটুকু মানলে আগামী হয়তো একটু কম ঘেন্না করবে।নমষ্কারান্তে....


আর্যতীর্থ