। নাম দিও।


প্রদীপ জ্বালাবে যদি উৎসব জুড়ে,
সব কটা সলতের এক একটা নাম দিও।
থাকবার কথা ছিলো, তবু যারা নেই আজ আমাদের মাঝে,
তাদের স্মৃতিরা যেন জ্বলে শিখা হয়ে।
মনের ভেতরঘরে আলো পৌঁছিও,
আমাদের আগে যারা বয়ে গেছে কক্ষনো না ফেরা সেই মোহনাতে ,
এক এক প্রদীপ হয়ে আমাদের সাথে থাক দীপাবলি রাতে।


প্রথমে আসুক চেনা বটের মিছিল।
আমি মা’কে হারিয়েছি,তোমারও ও কি অনুপম প্রিয় কেউ গেছে?
চলে যাওয়া প্রণামের পা,
আজও স্মৃতি খুললেই শিহরিত হয় মন যাদের আদর ভেবে,
তেমনই কাউকে কি হারিয়ে ফেলেছো?
মা’র মতো গিয়েছেন মেজমামিমাও,
আরো পাড়া-আত্মীয় কজন স্বজন।
হে প্রদীপ, জ্বলে উঠে কথা পৌঁছাও,
তেলে নয়, অশ্রুতে ভেজা সলতেরা ,
মনে হয় পাশে আছো কাছেই কোথাও,
যতই শূন্য ঘরে হোক রাতে ফেরা।


অসময়ে চলে গেছে যেই সব প্রাণ,
তাদের নামেও শিখা ব্যথাতুর হোক।
ভিজে যাক চোখ সেই শিশুকে স্মরণ করে ,
অকালে ডেঙ্গি যাকে নিয়ে গেছে কেড়ে।
হঠাৎ গলায় দড়ি যেই কিশোরীর,
অভিমানী মা আমার চলে গেছে বাপমা-কে ফেলে দিয়ে কান্না পাথারে,
বিষাদ প্রদীপ এক তারও নামে জ্বালো।
অস্থির যে যুবক গতিতে খোয়ালো প্রাণ হেলমেটহীন,
‘বেশ হয়েছে’ ভাব ছেড়ে ভ্রষ্ট সে যৌবন আজ আলো পাক।আধা চেনা কানে শোনা সেইসব ভোলা নাম সামনে দাঁড়াক।


সবশেষে, সারি দেওয়া শিখাদের ঠিক মাঝখানে,
সব চেয়ে বড় এক প্রদীপকে রাখো।
এ সলতে সবচেয়ে উজ্জ্বল হোক,
যদিও যাদের জন্য শিখা, তারা সব নামহীন,
এক্স এক্স ক্রোমোজোমে সাজা  পাওয়া ভ্রুণ।
বিগত কন্যাদের মৃত সম্ভাবনাগুলো,
এদেশকে ফের মনে করাক আগুন।


এই দীপাবলিতে ঘর বার আলো করে প্রদীপ জ্বালিও।
যারা চলে গেছে কোনো অন্য আঁধারে,
এক একটি শিখাদের সেই নাম দিও।


আর্যতীর্থ