। নাগরিক।


যে ছেলেটা চা-দোকানে খেটে চলে ফাইফরমাস,
স্বাধীনতা তার কাছে পাড়ার ক্লাবের দেওয়া ভালো প্রাতরাশ।
গুনগুন তার গানে ফুটে ওঠে শীলা কি জওয়ানি,
মাইকে তারস্বরে আঁখ মে ভরলো পানি’র মানে তার কাছে কিছু বেশি খদ্দের আর বাড়া খাটনিও,
কাপডিশ ভেঙে গেলে পনেরো আগস্ট বলে ক্ষমা পাবে কি ও?


ইঁটভাটা জুড়ে কাজ, চলছে ও চলবেই, আগস্ট পনেরো তো কি?
মাথায় ইঁটের বোঝা, সিঁড়ি বায় কিশোরী, ওর কথা কেউ বলছো কি?
চুলে জট, চামড়ার তামাটে বরণে অপুষ্টি প্রবল,
কিছু দূরে রাজপথ জুড়ে যাওয়া সুবেশ তেরঙাধারী পড়ুয়ার দল কোনো প্রভাব ফেলেনা তার রুটিনে,
কেউ জানো ওর ঘরে স্বাধীনতা কবে যাবে ঝুপড়িকে চিনে?


ওদিকে বসে যে লোক, পাঁইটের লোভে সে বেচেছিলো ভোট,
ভাতহীন সংসারে আজ বউ মুখ করে দিলো খুব একচোট।
একশো দিনের কাজ ভাঁটিখানা শুঁষে নিলো কবে,
যতটা সহজ মদ , পেটভরে ডালভাত তত অনায়াসে ঠিক পাওয়া যাবে কবে, সেটা যদি তেরঙা না জানে,
আগস্ট পনেরো তবে তার সংসারে কোন মানে বয়ে আনে?


আর সেই গৃহবধূ, মেয়ে হয়েছে বলে একবিংশতে যে অচ্ছুতসমা,
স্বাধীনতা , বলে দাও আরো কত লাঞ্ছনা তার ভাগে জমা।
শুক্রের দায়িত্ব আজীবন বহন করে চলেছে জরায়ু,
কবে সেই সংস্কারী বদনামে শেষ হবে আয়ু, সেটা আগে বলে তারপর বলো ছেলে মেয়ের সমান,
সাতটা দশক গেলো, কন্যা বাঁচাতে তবু ভরসা স্লোগান।


ঘুমিয়েছে স্বাধীনতা, স্বপ্ন চলেছে দেখে অনাবিল আগামীকে ভেবে,
আগস্ট পনেরো এলে এইসব নাগরিক যেদিন মিছিল খুঁজে নেবে।


আর্যতীর্থ