। পাগল।


বিশ্বকর্মার প্যান্ডেল এবং তোমার শাড়ি কেনা  প্রায় একসাথে হয়,
আমি  নিশ্চিত এবছরও হয়নি তার ব্যত্যয়।
তোমার বরাবরের আপত্তি ডিসকাউন্টের ভিড়ে যেতে,
অথচ কি অক্লেশে বাবুবাগানে আড়াই ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে!
পুজো এলেই তোমার অন্যরকম হতো চোখমুখ,
মেঘ কেটে যাওয়া শরৎ আকাশের হাঁফ ছাড়া সুখ জড়ো হতো এসে, এক অনির্বচনীয় অদ্ভুত আবেশে।
মনে আছে, একবার নিছক কৌতুহলে গিয়েছিলাম কুমোরটুলি, পোটো পাড়ায়?
কাশফুল কেমন করে ঢেউ তোলে হাওয়ার ইশারায়,
সেটা দেখার জন্য কত, কত্তদূর যাওয়া হয়েছিলো, মনে আছে?
মফস্বলি ছোট সে এক রেলস্টেশনের কাছে
দুজনে দিগন্ত খুঁজে  পেঁজা মেঘ দেখা,
দেখে নেওয়া মেঘে হয় কত ছবি লেখা,
সেই সব স্মৃতিগুলো নিশিদিন বাঁচে আমার মগজ জুড়ে।
সারারাত পুজো থেকে পুজো ঘুরে ঘুরে,
ক্লান্ত দুহাতে ধরে ভোরের চায়ের ভাঁড়,
অর্থহীন কত খুনসুটি করে গেছি, অবসরে সে সব কি  কখনো মনে পড়ে তোমার?
আমি এখন যেখানে থাকি, সেখানকার দেওয়াল বড় সাদা,
জানলা নেই, একটাই দরজা, গেটের কাছে বসে উর্দিওলা পেয়াদা,
সাদা পোশাকের  ডাক্তার নার্স আসা যাওয়া করে মাঝে মাঝে,
ঘন্টার কাঁটা মেনে সুঁই ফু্ঁড়ে দিয়ে যায় শরীরের ভাঁজে,
তা নইলে নাকি মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আমার বিকার,
বাড়ির লোকেরা কেউ দেখতে আসে না আর।
তুমিও তো আসোনা, আসোনি কখনো দেখে যেতে,
জানো,  বড় সাধ জাগে পুরোনো জীবনটাকে ফের ফিরে পেতে,
পুজোর গন্ধ মেখে ঘুরে বেড়াতে আলোকিত রাস্তায় রাস্তায়,
একটিবারের জন্য আসবে? নিয়ে যাবে আমায়?


ভাবছি একটা কথা উচিৎ হবে কিনা তোমায় জানানো,
এখানে সবাই বলে তুমি নাকি কল্পনা,  আমার বানানো।


আর্যতীর্থ