। পরের জন্মে।


পরের জন্ম বলে যদি কিচ্ছু থাকে,
হে বিধাতা,  আমায় দিও আমার মা’কে।
ছেলেই হলাম মেয়েই হলাম, কিংবা ক্লীব,
যেমনভাবে গড়বে আমায় মেনে নেবো,
সামলে নেবো ফেলো যতই দুর্বিপাকে,
শুধু আমায় ফিরিয়ে দিও আমার মা’কে।


চড়চাপাটি পড়ুক আবার ছোটোবেলায়
কপালে হাত জাগুক না রাত জ্বর আর জ্বালায়
কঠিন শাসক, যার  ছোঁয়াতে অসীম স্নেহ,
জুড়াক আমার তার কোলে এই শ্রান্ত দেহ,
ফ্যানাভাতের সে অমৃত পড়ার ফাঁকে,
আসবে সবই, পরেরবারও পেলে মা’কে।


এখন যে মা মুখ দেখলেই ভাবনা বোঝে,
পরের জন্মে আমার দুচোখ তাকেই খোঁজে
কোন বন্ধুর সাথে আমার খেলতে যাওয়া,
যার কানে সেই বার্তা দিতো দখিন হাওয়া,
বুড়ো আমি মিস করি যেই ধমকটাকে,
অলৌকিকে জন্মালে ফের চাই সে মা’কে।


দেরী করে মাঝে মাঝেই ফিরি বাড়ি,
মা’র ফোন পায় নিয়ম করে বুড়োধাড়ি।
ডায়ালিসিস, পেসমেকারে এখন কাবু,
বন্ধ তবু হয়নি ‘ কখন আসবি বাবু?’
জন্মান্তর পবিত্র হোক তাঁর সে ডাকে,
পরের জন্মে আমায় দিও আমার মা’কে।


উচিত কথা বলতে মায়ের জিভ বাঁধে না
ভাবনাগুলো সটান বলেন রেয়াত বিনা।
শিরদাঁড়াটা আজকে সোজা তাঁরই গুনে,
তাঁরই মত রাগ চড়ে যায় মিথ্যে শুনে।
তিনিই শেখান কোথায় কে মাছ ঢাকছে শাকে,
পরের জন্মে পথ দেখাতে চাই যে মা’কে।


স্মৃতির ঝোলা ভরা ধমক ভালোবাসায়,
পরের জন্মে পাবো আবার আছি আশায়।
কাঁপা হাতের ছোঁয়ায় আজও ভরসা ফেরে,
পরের জন্মে কে যেতে চায় এসুখ ছেড়ে?
দিতেই যদি পরের জন্ম চাও আমাকে,
হে বিধাতা! চাইবো আবার আমার মা’কে।


আর্যতীর্থ