। ধন্দ।


বেশ ধন্দে পড়ে আছি হে,গুলিয়ে যাচ্ছে সব।
এক কিশোরের মৃত্যু নিয়ে চলছে এখন খবর মহোৎসব।
সোস্যাল মিডিয়াও সরগরম, কিভাবে বগলে হলো অতবড় ক্ষত,
ঝোপ বুঝে কোপ মারার রাজনীতিটাও যথারীতি অব্যাহত।
সবাই  যেন হঠাৎ জেগে উঠে অবাক হয়ে ভাবে
ওমা, কৈশোরে আবার মদের ছোঁয়া লাগলো কবে?
ভাবখানা যেন, অধুনা যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা মদের দোকানে,
বাইক গাড়িতে প্রায় পথ অবরোধ করে যারা মদ কিনে আনে,
তাদের সকলেরই চোখেমুখে লেখা আছে একুশ প্লাস।
মধ্যবিত্ত ফ্রীজে এখন দিব্যি বোতল থাকে, আলমারিতে সাজানো মদের গ্লাস,
সেই সব বাড়িতে কৈশোর যে একটু কৌতুহলী হবে,
পয়সা পেলে মদের দোকানে লাইন লাগাবে,
তাতে আশ্চর্য হলে চলবে?
আমি জানি তোমরা হারিয়ে যাওয়া অনুশাসনের কথা বলবে,
বলবে আহা, আমাদের মা বাবাদের শাসনে হার মানতো পুলিশ,
আর আমরা,  সন্তানস্নেহে অন্ধ কৌরবপিতার মতো, নিতান্ত আব্বুলিশ।
তা বাপু হে, আমাদের কড়া হতে কোন ঠাকুর্দা বারণ করেছিলো?
যে মদের নেশা এক ফুটন্ত কিশোরের প্রাণ নিলো,
তার পকেটমানির আমরাই তো জোগানদার।
সে যদি বিপথে যায় তার সব দায় কি শুধু তার?
আমরা  ওর হাতে দিয়েছি দামী মোবাইল, ল্যাপটপ আর গ্যাজেট নানানরকম,
আমাদের থেকেই শেখা সোস্যাল মিডিয়ায় নিশিদিন বকমবকম,
প্রাইভেসির ধুয়ো তুলে ব্লক করতে দিয়েছি বাবা মা কে,
স্কুলে টিচারের অভিযোগ পেয়ে উল্টো তুলোধোনা করেছি তাঁকে।
আজকের এই দিকভ্রষ্ট কৈশোর আমাদেরই সৃষ্টি পুরোপুরিভাবে,
আগুন দাবানল হয়ে একদিন যে গোটা বনকে জ্বালাবে,
সেটা বুঝেও এড়িয়ে গেছি সবাই।
বেশ ধন্দে পড়ে গেছি এখন তাই,
কার জন্য শোক করবো? এক মৃত কিশোর নাকি খুন হওয়া কৈশোর?
আজ সারাদিন হৃৎপিণ্ড মুচড়ে খুঁজছি এ প্রশ্নের উত্তর।


আর্যতীর্থ