। বালি।

ফুরিয়ে আসা দিনের আলোয় কথারা সব ঝাপসে আসে,
উলুক ঝুলুক শব্দরা সব ছন্দ মাখতে ভালোই বাসে,
ছন্নছাড়া বিষম কথা মনখারাপের দোসর যত,
ঘুরছে তারা ছন্দগুলো আটকে দিতে বোবার ফাঁসে।
সব কথারা চায়না বাঁধন ছন্দমিলের নিয়ম খাঁচায়,
ভাবনাগুলোয় ছন্দ দিলে কিছু কথা জোরসে চেঁচায়
অনেক কথা বাধ্য অতি সুড়ুৎ ঢোকে মিল খোলসে,
কিছু কথা মিলগুলোকে আশার সুতোয় তুড়ুক নাচায়।
ঝাঁঝিয়ে উঠে কোনো কথা ছন্দকে দেয় ঠোকর মেরে
পদ্যতে যেই ঢুকতে বলি কামড় দিতে আসে তেড়ে
সামলে নিয়ে সেই কথাদের যত্ন করে এড়িয়ে চলি
বাধ্য কিছু কথার সীমায় আমার পদ্য ঘোরে ফেরে।
ভাবনাগুলো খুব খেপেছে আমার এমন সীমা টানায়
আহম্মকে এখন নাকি মিল দিয়ে সব পদ্য বানায়
যুগ পড়েছে বাক্যি বলার খোলা গলায় চাঁছাছোলা,
ছন্দমিলের ন্যাকাপনা এখন কি আর পদ্যে মানায়?
ব্যাকরণের মানলে নিয়ম কবিতা হয় ভীষণ একা
লিখতে হবে এমন যেন পদ্য ছুঁলে লাগবে ছ্যাঁকা
ছন্দতে নয়,  শব্দগুলো নিজের থেকে উঠবে জ্বলে
কলম তুলে উচিৎ এমন আগুনখেকো ভাবনা লেখা।
কাঁচুমাচু হয়ে বলি ও ভাবনা তোর পায়ে পড়ি
জানিসই তো পদ্য আমার হয় না তেমন আহামরি,
বয়েসও তো অনেক হলো, গেছি কেমন ঠাণ্ডা মেরে
এই বয়েসে নাই বা হলো আগুনলেখায় হাতেখড়ি।
খামোখা আর পদ্য শুনে দিসনা বাপু চোখা গালি
নাহয় আমার কবিতাতে ছন্দমিলের ভেজাল খালি
শুধু কি আর কথায় আগুন ছুটলে তবেই পদ্য হবে?
আগুন যদি হয় দাবানল তা থামাতে লাগে বালি।
ছন্দমিলের ছদ্মবেশে খেলো হওয়ার দুঃখ মুছি
বোদ্ধা যাঁরা, জানি এসব পদ্যে তাদের নেই তো রুচি
বাকি সবাই হোক না আগুন দামী ভারী শব্দ নিয়ে,
আমি না হয় বালি-ই হলাম, মূল্যে হলাম খোলামকুচি।

আর্যতীর্থ