। পথ ।


হিসেবের খাতাটার ধুলোবালি ঝেড়ে  রোজ লাভগুড় খোঁজো,
দুনিয়াদারির যত দেনাপাওনাকে নখআয়নায় রাখা সমীচীন বোঝো,
আধুলির গরমিলে আকাশ ভাঙতে পারে, সারাদিন হতে পারে মাটি,
চক্রবৃদ্ধিহারে কোথায় কতটা সুদ, ব্যালেন্সশিটে তা লেখা ভারী পরিপাটি,
সেনসেক্স ওঠাপড়া, নিফটির গতিপথে কোথায় তুঙ্গদশা      লহমায় জানো,
পড়শিরা অবগত আছে, কেবল কুবেরকে তুমি ঈশ্বর মানো।
ওহে ও হিসেবী, পাই পাই পাওনাকে দশমিক মিলিয়ে যে লিখছো খাতায়,
বাইরে তাকিয়ে দেখো, সকাল দুপুর রাত, ফোঁটা ফোঁটা করে   ক্রমে আয়ু বয়ে যায়।


ও হিসেবী, শেষ কবে কোনো বইয়ে ডুব দিয়ে চুপচুপে হয়ে গেছো ভালোলাগাতে?
কবিতার কথা ছাড়ো, কবিতা নীলার মতো, সয়না তা সকলের হাতে,
অন্য কিছুই সই। উপন্যাস বা ছোটোগল্পই হোক, কিংবা গভীরে নেওয়া কল্পকথার মতো সত্যকথন,
জীবনী বা রূপকথা, ভ্রমণের ডাইরি ,লড়াইয়ের ময়দানে নাহারা গল্পে শেষ কবে বলো তুমি হারিয়েছো মন?
হতে পারে, পড়ুয়া মোটেই নও তুমি, হিসেবের খাতা আর অর্থনীতির শুধু বোঝো ঘাতঘোঁত,
তাই বলে সেটাকেই জগৎ বানালে, ধুলো আর শ্যাওলায় ঢেকে থেকে মুছে যাবে বাকি সব পথ।


কোন পথ? সেটা আমি জানিনা তো, তোমার যাওয়ার কথা ছিলো কোনখানে,
হিসেবের খাতা থেকে কিছু ছুটি চুরি করে  তোমাকেই যেতে হবে তার সন্ধানে।
হতে পারে কোনো নদী পাহাড় সাগর, তোমাকে আদর করবে বলে অনন্ত অপেক্ষায় আছে,
অথবা ফুলের গাছ নিচের বাগানে পাপড়িতে দিন গোনে কবে তুমি ঘেঁষে আসো কাছে,
কাছের মানুষ কেউ , যার সাথে কফি খেতে যাবে বলে কতবার কথা দিয়ে বেমালুম চেপে গেছো পরে,
কলেজবন্ধুগ্রুপ, ‘দেখা হোক দেখা হোক’ রোজরোজ বলে যারা ফেসবুকে লাফালাফি করে,
অথবা অন্যতর সৃষ্টিসুষমা, হিসাবআলেয়া যার থেকে ক্রমে ক্রমে চলে গেছে বহুদূরে নিয়ে
ব্যালেন্সশিটের ওই ভুলভুলাইয়া ছেড়ে জীবন ঝাঁকিয়ে দেখো
মন কিছু স্বপ্নকে রেখেছে বাঁচিয়ে।


তারপর একবার, অন্তত একবার , সেই পথে হেঁটে যেও  হাঁটু আর মগজের জড়তা কাটিয়ে..


আর্যতীর্থ