। রাইয়ের অন্তর্ধান।


একা একা কফি নিয়ে বসে আছি আজ,
সামনে তিন নম্বর কাপ, তাও প্রায় শেষ।
ক্রমে ক্রমে বেড়ে চলে কপালের ভাঁজ,
মুঠোফোন চুপ, ঘন্টা দুয়েক হলো রাই নিরুদ্দেশ।
এস এম এস, হোয়াটস অ্যাপে সওয়াল রেখেছি,
এখনো পড়েনি তাতে কাঙ্খিত জোড়া নীল টিক
টিন এজারি দ্রুততায় বারবার মুঠোফোন খুলে দেখেছি,
রাইয়ের খবর নেই , ব্যাপারস্যাপার ভালো লাগছে না ঠিক।
মোবাইলে চার্জ আছে , সেটা আমি ভালো করে জানি,
(অভিজ্ঞতায় ঠেকে জিজ্ঞেস করে নিই রোজ)
মুঠোফোন অফ রেখে শ্রীমতীর আচমকা একি হয়রানি,
না বলে কোথায় গেলো, কি উপায়ে পাবো তার খোঁজ?
বাজার যে যায়নি সেটা নিশ্চিত বলে দেওয়া যায়
( হুকুমের দাস আমি সে ব্যাপারে রয়েছি তো গৃহে)
বেশীদূর যাবে না যে, সে প্রমাণ রাখা ছিলো সাজসজ্জায়,
কোথায় সে আছে আজ, সর্বদা হাতে থাকা ফোন নিভিয়ে?
বিপদ কিছু কি হলো? আজকাল বেড়ে গেছে ফোন ছিনতাই,
ধ্যাত, তাহলে খবর দিতো কারো ফোন থেকে,
থানায় যাবার আগে অন্তত সে টুকু তো করতোই রাই,
নাহ, এ সব নয় ,ফালতু ভাবনাগুলো মুছি মন থেকে।
তাহলে কি বা হলো, কেন তার মুঠোফোন বন্ধ হঠাৎ?
চিন্তা বাড়তে থাকে, আজকাল কত কিছু দেখি হে খবরে
'সাবধান ইন্ডিয়া'ইত্যাদি সিরিয়ালে এমনই তো ঘটে অকস্মাৎ,
চেনা ফোন অফ হলে আজকাল তাই বাবা বড় ভয় করে।
কাঁপা হাতে কফি ঢালি, এই নিয়ে চারকাপ হলো,
( রাইকে আবার যেন দিও না এ সংখ্যাটা কানে)
ঘড়ির কাঁটারা দেখি ক্রমে ক্রমে আরও একঘন্টা পেরোলো,
ধড়াচূড়া পরে নিই, নিশ্চিত যেতে হবে রাই সন্ধানে।
এমন সময় বাজে নূপুরশিঞ্জিনি হয়ে চেনা রিংটোন,
চিন্তারা ভাষা হয়ে উদগত হতে থাকে প্রায় চিৎকারে,
রাইয়ের জবাব শুনে হাত থেকে প্রায় বুঝি পড়ে যায় ফোন,
'গর্দভ, জানো না কি অফ করে ঢুকি পারলারে?'


আর্যতীর্থ