। রাইকিশোরীর শাড়ি।


মা আসছেন মা আসছেন, তিড়িং বিড়িং নাচছো সবাই,
আমার কিন্তু ভাল্লাগে না, পুজো মানেই পকেট জবাই।
রাইকিশোরী বলেন মুখে, কিছুই এবার নেবো না আর,
( এভারেস্টের চেয়েও উঁচু আলমারিতে শাড়ির পাহাড়)
মুখের কথা মেনে নিয়ে যদি বলি থাক তাহলে
জরিমানায় কাহিল হবো অভিজ্ঞতায় সেটাই বলে।
ড্রাইভার আর কাজের মাসী, তাদেরও তো বোনাস চাই,
মাসপয়লায় ফক্কা পকেট, টাকার গাছ যে কোথায় পাই।
বাজারে মাছ সব্জীপাতি কিনতে গিয়েও ঝাড় হলো
এমন ছ্যাঁকায় জ্বলছি দাদা কম পড়ে যায় বার্নলও।
তার ওপরে রাই রয়েছেন , দুই কন্যাও কম কিসে,
দুই চোখে জল মুছতে গিয়ে গামছা হলো কমতি সে।
মেয়েদের কথা খুলেই বলি, যায়না তারা বাজারহাট
দোরগোড়াতে জুতো জামা , অ্যমাজন বা ফ্লিপকার্ট।
ক্রেডিটকার্ডে দেনায় গোটা মাইনে আমার লেখা রে,
খরচা কিছু কম হতো হে নিলে এ কার্ড হ্যাকারে।


কদিন আগেই রাই ডাকলেন এইযে আমার আলসে কানাই,
শেষের দিকে কিনলে শাড়ি কি করে আর ব্লাউজ বানাই?
গতর তোলো, আজই চলো ঘুরে আসি কয় দোকানে
( বোঝো ব্যাপার ! বলেছিলেন যাবেন না আর ওদিক পানে!)
এসব দিনে থাকি আমি ড্রাইভার কাম কুলির রোলে,
দুটো বেলা পেরিয়ে গেলো শাড়ি কেনার হট্টগোলে।
দুই ঘন্টায় একটা শাড়ি , কি চুলচেরা চোখ গো তার
ধৈর্যতে কেউ নোবেল দিলে শাড়ির দোকান যোগ্য তার।
কোনটা রেশম, কোনটা লিনেন, কোনটা যে ঠিক শুদ্ধ তাঁত
রকমারির জোগান দেখে এই বেচারার মাথায় হাত।
নামের কত আছে বাহার , কি বলবো তার কুটকচালি,
আমার বিদ্যে কঁকিয়ে কেঁদে বেনারসি আর ধনেখালি।
রাই বলে যান গড়গড়িয়ে বাঁধনি ইক্কত মঙ্গলগিরি
আমার কাছে একই লাগে জামদানি আর বালুচরী।
লাল নীল আর হলুদ সবুজ তারাও দেখি হাজার শেডে
মভ আর পিচ তফাত বোঝান রাইকিশোরী দারুণ ক্ষেদে।
এমনি করে নানান দোকান ঘন্টা বারো ঘোরার পরে
আধা ডজন শাড়ি কিনে আমার রানী এলেন ঘরে।
খসলো কত? জানতে চেয়ে দুঃখ কেন দেন মশাই
চোখের জলকে নিংড়ে নিতে পুজোয় নতুন টাওয়েল চাই।


যদি ভাবেন শাড়ি কিনেই শুধরে গেলো হাল তাতে,
আবার ভাবুন, এই রবিবার যাবো শাড়ি পাল্টাতে।


আর্যতীর্থ