। রথ।


সৃষ্টিকর্তা বিশ্রাম করছেন।
গ্রহ তারা অণু পরমাণু, সকলেই অটো মোডে আছে।
বিবর্তন ইত্যাদিও গুছিয়ে এনেছেন,
অনন্ত আগামীতে অখন্ড অবসর থাকবার কথা তার কাছে।
কিন্তু, মানুষ! তাঁর মূঢ় ভক্তের দল,
কলরব কোলাহলে কান ঝালাপালা করে দেয় নানান দাবীতে।
ডেকেই চলেছে নানা অছিলায় তাঁকে,
সামলাতে না পারলে সে অগোছালো বাক্যধারাকে,
বিশ্রাম নেওয়া আর হয়না নিভৃতে।
তার ওপরে  তাঁর কাছে আবেদন পাঠানোর পথ আর সরাসরি নয়।
নানান জোব্বা পরে অজস্র ফড়ে জুটে গেছে আজকাল,
অটো মোডে দেওয়া, তাই নাক গলাননা তিনি,
মারুক কাটুক ওরা যে যেমন পারে, বহুযুগ এব্যাপারে তিনি বেখেয়াল।
এই আদার ব্যাপারীরা বরাবর তাঁর জাহাজের মালিক বলে জাহির করে নিজেদের,
তিনি রিপুর অতীত, নচেৎ ভয়ঙ্কর রাগ হতো তাঁর।
উপাসনাস্থলগুলোতে পাপ ও পুণ্যের হাতবদল দেখে এতই বিতৃষ্ণ তিনি,
বিকৃত প্রার্থনাগুলো মন দিয়ে শোনেন না আর।
আজকে, হঠাৎ একটু যেন অন্য কোলাহল ভেসে আসে পৃথিবীর থেকে,
কোনো চাহিদা নেই, অযুত কন্ঠে ভেসে আসছে শুধু তাঁকে ডাকার উন্মাদনা।
আবেদনহীন এই নিবেদন কোথা থেকে ভেসে আসে এই কলিযুগে?
অভিভূত ভগবান হন উন্মনা।
তড়িতে বিশ্রাম ভেঙে তিনি নামেন তাঁর অটো মোড দুনিয়ায়,
যেখানে আজ বর্ণ জাতি ধর্ম মিশে, দারিদ্র ঐশ্বর্য মিলে রশি টেনে নামগানে মুখরিত পথ।
ঈশ্বর নেন বড় স্বস্তির শ্বাস।
ফড়েরা দখল নিতে পারেনি এখনো সব,  অটুট রয়েছে আজও তাঁর জয়রথ।


আর্যতীর্থ