।সব্জী।


রবির বিকেল, অলস মগজে মনে ভাসে কিছু পদ্য,
মনটি যদিও রান্নাঘরেই, রাই ঢুকেছেন সদ্য।
সকালে বাজারে হুকুম হয়েছে নানাবিধ শাকসব্জী,
জিভে লালা ঝরে বহুদিন পরে খাদ্যে ডোবাবো কবজি।
( তাবলে ভাবলে না খেয়ে থাকি, ভুল হবে সেই তথ্য,
চুপি চুপি বলি ,বাকি দিন জোটে সুগার রোগীর পথ্য)
যাহোক ছন্দ ভাবতে ভাবতে খাবার গন্ধ আসে,
হঠাৎ দেখি রাইকিশোরী দাঁড়িয়ে আমারই পাশে।
‘আমি খেটে খেটে মরছি আর কাব্যি করছো তুমি!’
সব শান্তিতে ছাই দিয়ে হলো বারান্দা রণভূমি।
আমি বলি ‘প্রিয়ে ,কাব্য তো হয় ফুল পাখি ইত্যাদি
টবের ফুলের মাঝে বসে তাই কথাকে ছন্দে বাঁধি।’
রাই ঝামটান , ‘ওসব গুল্প বুঝিও অন্য লোককে,
বারান্দা থেকে শুধু ফুল পাখি পড়ে কি কবির চক্ষে?
এদিকে ওদিকে কত প্রলোভন, দেখিনা আমি তা ভাবো?
ওহে কবি তুমি ডালে ডালে গেলে আমিও পাতাতে যাবো।
এত পাতা জুড়ে প্রেমটেম লেখো , আমার জন্যে সব কি?
শিবের বাবাও জানেনা কবিরা কোথায় মারেন ডুবকি।’
আমি বলি ‘প্রিয়ে , বিশ্বাস করো,এ কবি অমন মোটে না!’
( আসল ব্যাপার, এ হতভাগার পাত্তা তেমন জোটে না!
কার্টুনসম এ চেহারা দেখে পটবে না কোনো নারী,
কঠিন সত্য , তবু এ তথ্য মুখে কি বলতে পারি?)
রাই বলে ওঠে , ‘একটা ঘটনা আমার মাথায় ঢোকেনা,
তরিতরকারি ফলমূল নিয়ে কোন কবি কেন লেখেনা?
কবিতা তো বহু  গোলাপ বকুল রজনীগন্ধা গুচ্ছে,
গাজর নিয়ে কি লিখেছেন কেউ? কিংবা ঢ্যাঁড়স উচ্ছে?
পালংশাকের ওপরে কবিতা লেখা কেন বলো হয়না,
তবে কি ধরবো কবিতার কোনো গ্রীন ভিটামিন সয়না?’
নারী নিয়ে তবু তর্কটা হলে দিতে পারি তার জবাবী,
হেলেঞ্চা নিয়ে চললে সওয়াল যুক্তি তখন অভাবী।
আমি সেই থেকে ভেবে ভেবে করি নতুন কথাতে রেওয়াজ,
ফুল পাখি চাঁদ অনেক লিখেছি, এবারে বিষয় পেঁয়াজ।


আর্যতীর্থ