।সহজ কঠিন।


এক কবিতা দেবো তোমায়, এমন ভেবেই লেখা শুরু।
শব্দ তুলে মাটির থেকে, সাবধানে তাই পালিশ করি,
ভেবে দেখি কোনখানা ঠিক মানিয়ে যাবে চন্দ্রহারে,
কোনটা আবার খাপ খাবে না ঝিলিক দেওয়া কানসোনাতে,
জরিপ করি , ঝালাই করি, তোমার সাথে মানায় যাতে।


ঝালর দেওয়া শব্দগুলো  রংবেরংয়ে সাজছিলো খুব,যেমন করে রাস্তা সাজে পরিপাটি রাণী যখন নেমে আসেন প্রাসাদ থেকে। যেমন করে পথের আলো হঠাৎ যত্নে দ্বিগুণ উজল, তেমনি করে শব্দ আমার ঝিকমিকানো পোশাক পরে,
তাল লয় সুর ঠিক করে নেয় ,গাইতে হবে সুঠাম স্বরে।


কিন্তু তুমি যখন এলে, রাণীর মতো নয় তা মোটে। সাড়ম্বরে সালংকারে সজ্জিত নও, একশোখানা দাস আর দাসী ঘুরছে না কেউ তোমার পিছে, চারণ কোনো গাইছে না গান বন্দনাতে। তুমি এলে , ভোরের মতন আঁধার মোছা সে রং নিয়ে, স্নিগ্ধ যে রং গায়ে মেখে জীবন রোজের আয়না দেখে।
তুমি এলে নদীর মতন গায়ে মাটির গন্ধ মেখে।


এতদিনের মনোযোগে তৈরী করা আভূষণ আজ খোলামকুচি। তোমার তো চাই ফুলের গন্ধ, গাছের পাতার টাটকা সবুজ, তোমার তো চাই সরলতা ঘুমভাঙানি পাখির গানের, হীরেমুক্তোর গয়নাগাটি তোমার কাছে পথের ধারের ধুলোর সমান।
কেমন করে ঝাড়াইবাছাই করা কথায় বুনবো তোমার বন্দনাগান?


কাজেই কলম ভাসিয়ে দিলাম, লিখুক না সে মাটির কথা।
আটপৌরে কথার স্রোতে ভাসুক না সে, লিখুক শব্দ ডুবিয়ে কালি আমরুটিনে, যেমন করে প্রেম বলে দেয় গ্রামীণ কিশোর বাকরহিত হাসির ফাঁকে...
তেমন করে শুধুই কিছু সহজ কথায় সাজাই এবার কবিতাকে।


আর্যতীর্থ