। শেষ থেকে।


তার মুখ জ্বলজ্বল স্মৃতি জুড়ে স্পষ্ট,
সুখ আছে যত তত কুল ছাপা কষ্ট।
খুনসুটি হীরে আছে চুমুদের পান্না,
ভুল বোঝা কাঁটা আছে, একবুক কান্না।


সময় পিছু ডাকে ঘড়িটার কাঁটাতে,
কলেজের ক্যান্টিনে মশগুল ভাটাতে।
সর্পের মতো বেণী, চোখে হারে হরিণী,
নজরেই আটকে, এতটুকু সরিনি।


মৃদু হাসি দিয়ে শুরু, পরে কথা অল্প
একে একে জমা হয়  দুজনের গল্প।
প্রথম চুমুর ছোঁয়া , বৈশাখী সন্ধ্যায়,
শাওন ভাঁদো খেলে ,মনে মধুছন্দায়।


দুজনে একলা হলে, দুনিয়া ভোকাট্টা
পার্কের বেঞ্চ জানে. আর জানে মাঠটা।
ফিসফিস চলে কথা, মুহূর্ত উড়ানে,
ছোঁয়াতে শান্তি লেখা, ভারী প্রাণজুড়ানে।


একদিন সেমাঠে, তার মুখ গম্ভীর,
অসহ্য নীরবতা, মন পুড়ে অস্থির।
ছলছল চোখ তার, ঠোঁটে নেই শব্দ
সমাজ দিয়েছে করে, দুজনকে জব্দ।


বিয়ে তার আগামীতে, ঠিক জাতি গোত্রে
চাঁদ কেঁদে দেখেছিলো আমাকে সে রাত্রে
মুখে নেই কোনো কথা, উদাসী কাঠিন্য,
ভেঙে যাওয়া মন জানে, গল্পটা অন্য।


সে মেয়ে ধরেনি হাত, প্রেম তো বাহুল্য,
বাবার অমতে তার ,কানাকড়ি মূল্য।
আমার মনকে গেছে, সন্দেহ ঝলসে,
আগাগোড়া ছলনা, এত ছিলো খল সে?


দুটো দশক গেছে, জীবনকে মাড়িয়ে,
আমিও রয়েছি একা, বিষণ্ণ দাঁড়িয়ে।
প্রেম থেকে বিশ্বাস, কোনকালে উঠেছে,
কিছু না দিয়েই সে, সবটুকু লুটেছে।


সে হঠাৎ সামনে, কুড়ি সাল পরে যে,
শব্দেরা উথলায়, মনের ভেতরে যে।
আমার সামনে এসে, সে যেই দাঁড়ালো,
বিশখানা সাল যেন, মুহূর্তে হারালো।


হরিণ চক্ষু তুলে,  বললো সে প্রাক্তন
আবেগকে লুকানো ,চেষ্টায় প্রাণপণ।
‘দুটো কথা বলতে বহু দিন গুনছি,’
শান্ত গলায় বলি কানপাতা, শুনছি।


বললো সে এটুকু, ‘ ক্ষমা কোরো পারলে’
আমি বলি ‘কেন এই স্বপ্নকে কাড়লে?
এটা জানা হয়নি, কার তুমি ঘরণী,’
অস্ফুটে মেয়ে বলে, ‘ বিয়েটা তো করিনি’।


বিনামেঘে চারদিকে বজ্ররা গর্জায়
‘তবে কেন’, বলি আমি বিস্ফোটী কান্নায়।
কম্পিত গলা বলে ‘হলে ব্লাড ক্যান্সার,
স্বপ্নরা দূরে যায়, জ্বলন্ত সংসার।’


আমি বলি চেঁচিয়ে, ‘একা একা মরতে?
প্রেম মানে শুধু সুখ, লেখা কোন শর্তে?’
সে বললো মানছি , হয়েছিলো ভুল তো
তুমি হলে নৌকাটা কিছু কম দুলতো।


বৈশাখী বিকেলের হাওয়া বয় অল্প
শেষ থেকে ফের শুরু, কাঁচাপাকা গল্প।


আর্যতীর্থ