।স্মরণীয় দিন।


কোন দিন স্মরণীয় তাই বসে ভাবি ।
যেদিন জন্ম হলো, পৃথিবী এ হাতে দিলো সবখোল চাবি,
সেদিনটা ধরে নেওয়া যেতো হয়তো বা,
জন্মতারিখটি যে ভারী মনোলোভা, সবার জীবনে।
তবুও ভাবতে গেলে , স্মরণ করবো তাকে বলো কি কারণে,
ভাগ্য দিয়েছে দাগ বহমান ক্যালেন্ডারে নেহাত খেয়ালে,
খুব সাধারণ দিন গুরুত্ব পেয়ে যায় সময়ের চালে।
তাহলে কি যেই দিন বড় পাশ হোলো,
এইচ এস , ম্যাট্রিক, আঠারো বা ষোলো,
তাদের একটা কোনো দিন ধরে বলে দেবো স্মরণীয় সেটা?
অভিনন্দন আর প্রাইজের ঘটা, কবেই স্তিমিত হয়ে অস্ত গিয়েছে,
সার্টিফিকেটগুলো অদরকারের পুরু ধুলো জমিয়েছে।
তাহলে প্রথম প্রেম? চিরকুট লিখে দেওয়া কাঁপা কাঁপা হাতে,
কখন ঝলক দেখা, সারাদিন তাই শুধু আসে ভাবনাতে।
সে দিন মধুর বটে, কিন্তু সে কিশোরীমুখ স্মৃতির প্রান্তে জ্বলে ভারী ম্লাণ হয়ে
বহু জল তারপরে গিয়েছে এ নদী দিয়ে বয়ে।
তবে কি সে দিন নেবো, বধূ হয়ে যেইদিন এসেছিলো নারী?
রুক্ষ আগামী পথে পাশাপাশি হেঁটে যাবে দুই পথচারী,
তার প্রথম পদক্ষেপ, নিশ্চিত সেই ক্ষণ স্মরণীয় হবে?
দিনযাপনের নানা ক্ষয়িষ্ণু অধ্যায়ে সেই সুখ মুছে গেছে কবে,
দুজনেই ভুলে গেছি তা। রয়ে গেছে শুধু কিছু চেনা অভ্যেস,
সংসারী কাজ সেরে দশমিকে নেমে আসা মৃদু ভাগশেষ।
তাহলে সন্তান জন্ম? অনতি অতীতের সে বিশেষ দিন,
কাঁকনের মিঠে স্বরে বাজে রিনরিন, উপচিয়ে ওঠে সুখ প্রতি উদযাপনে,
তবু  জানি ক্রমে ভাগ শতাংশে কমে আসে, সহযাত্রী ঢোকে এসে তারও জীবনে।
তাহলে কোনটা হবে আজকে আমার কাছে দিন স্মরণের?
এই নিয়ে ভাবাভাবি করেছিও ঢের, অবশেষে পেয়েছি জবাব।
বুকে নিয়ে যাবতীয় রিপু ইত্যাদিমাখা মানুষী স্বভাব,
এই যে রয়েছি বেঁচে এক একটা দিন,
সময়ের পুঁজি থেকে যে আয়ু রোজ রোজ করে থাকি ঋণ, সে-ই স্মরণীয়।
কোনদিন স্মরণীয় , আমায় করোই যদি এমন সওয়াল,
প্রত্যেক ‘আজ’ এলে আমি ঠিক বুঝে ফেলি, সবচেয়ে স্মরণীয় ছিলো ‘গতকাল’।


আর্যতীর্থ