। সয়না কিছুই।


কিছু কিছু জিনিস হজম হয়না কখনো।
আমার বন্ধু রতন যেমন বমি করতো মদ গিললেই
ধমক মেরে বলতাম, খাস কেন?
ও বলতো, কোনোদিন যদি সহ্য হয়, তাই....
হয়নি সহ্য। প্যাংক্রিয়াটাইটিসে মরে গেলো বছর দুই আগে,
শেষবার মদ গেলার ভেদবমি আর থামলো না।
কেন জানিনা রতনের মুখটা মনে বারবার জাগে
যখনই হয় কিছু সয়ে যাওয়ার আলোচনা।


কিছু জিনিস সহ্য হয় না কখনো, কোনোদিনও না।
ভিক্ষার জন্ম হতো না হাঘরের পেটে খিদে সহ্য হলে
ব্যর্থতা সহ্য হলে ছাত্র বা প্রেমিকরা গলায় দড়ি দিত না,
চোর ডাকাত তৈরী হতোনা বেরোজগারি মেনে নিলে।
সয়ে গেছে বলে আমরা যখন হাত উল্টিয়ে বলি,
সেটা কেবল সময়ের প্রতি অপ্রাপ্তির চরম অভিমানে,
মনের গভীরে একা ক্ষতদের জ্বালা বয়ে নিয়ে চলি,
দগদগে ঘা  লুকাতে চিরকাল মুখোশেরা জানে।


সয়না , আমাদের অনেক কিছুই সয় না সারাজীবন।
পুরোনো প্রেমের স্মৃতি , বন্ধুর করা অপমান, শেষ মুহূর্তে ফিরিয়ে নেওয়া কথা,
বিশ্বাস করে ঠকার কাহিনী, নিজের দোষে সুযোগ হারানোর অন্তর্দহন,
সব মনে থাকে, সয়ে গেছে বলে দিই প্রবোধ অযথা।
রতনের বমির মতো বারবার উগড়াই সেই সব কালো কালো স্মৃতি,
প্রতিবার নিজেকে বোঝাই আর জ্বলবো না, সব সয়ে গেছে এইবার,
আসলে সবার মনে ঘুরেফিরে চলে আসে ভেদবমি ভীতি,
সইছে না বলে দিলে, আর যদি না থাকে পথ ফেরবার?


আর্যতীর্থ