শেষ কবে কেঁদেছিলাম মনে পড়ে না ।
কিন্তু তোমার জন্যে কালিকা প্রসাদ...
থাক...
পুরো নিঃস্ব করেই ছাড়লে ।
দুমড়েমুচড়ে বিভীষিকায়ও মৃত্যু হলো না ।
বেঁচে রইলাম পুড়বো বলে-
পোড়াবার সবটুকু সুর বড় যত্ন করে বেঁধেছিলে
ওই দোতারায় ।


এখন জলভরা মেঘের ওপারে তোমার বাস ।
ওখানেও নিশ্চয় মাটির গন্ধ খুঁজে ফিরছো, কালিকা প্রসাদ ?
অনেক বাউল, ফকির, শিল্পী বুঝি বন্ধু হয়েছে ?
একতারাটাও নিয়ে যেতে পারতে তুমি !
সঙ্গীহারা এই মাটির-দোসর সুর ভুলেছে কালিকা প্রসাদ-
মাটির-মানুষ বিনে সে যে কারো সঙ্গে কথা কয় না, কোনোদিন'ই-
এ তো তোমার অজানা ছিল না কালিকা প্রসাদ-
তবু চলে গেলে ।


তোমার জ্ঞান-প্রজ্ঞায় শক্তি ছিল, সাধ্যও ছিল অতিক্রমের-
শুধু জাহির করার বিদ্যে ছিল না কালিকা প্রসাদ ।
তাই তো এতো ভালোবাসি তোমায় ।
তোমার ঔদ্ধত্ববিহীন চলন-বলন,
একমুখ সেই সরল হাসি একতারাকে জাপটে ধরে,
আজ বড় নিথর করে কালিকা প্রসাদ-
আমি মুগ্ধতা খুঁজে শুধু স্তব্ধতা পাই, আর হাহাকার...
ভালোর চেয়েও ভালো বলেই বিধাতার বুঝি তর সইল না ।


এই চৈত্রের ঝড়ে তোমায় ভীষণ মনে পড়ে কালিকা প্রসাদ ।
মৃত্যু বুঝি খুব করে ভালোবাসতে শেখায় ?
তবে মৃত্যু যদি বলো- আমি বলবো
জন্ম দিয়েছো নবচেতনার ।
আবার মাটির টানে, শেকড় খোঁজার যাত্রা হবে শুরু-
তুমি সেই জয়ধ্বজা কালিকা প্রসাদ ।
অব্যক্ত সব সম্ভাবনার কেন্দ্রে তুমি চিরজীবী ।


কালিকা প্রসাদ, তোমায় ছুঁয়েই আকাশ মাটিতে মিশেছে ।
অমরত্বে জন্ম হয়েছে তোমার ।


কবিতাটি প্রয়াত লোকসঙ্গীত শিল্পী কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর অভিপ্রায়ে ২০১৭ ইংরেজির এপ্রিল মাসে লেখা হয় । আজ ৭ ই মার্চ শিল্পীর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে কবিতাটি পুনর্বার প্রকাশিত হল ।