মানবতার একটি পাঠ
মোঃ সালেহ উদ্দিন প্রামানিক (উত্তরের পথিক)


গাঢ় নীল পাথরের কাপ হাতে
মানবতার অপেক্ষায় থাকে মানবরা।
সন্ধ্যায়, পুষ্কুনির ধারে
জেসমিনের সুগন্ধী নিয়ে—
একটু সহানুভূতির অপেক্ষায় থাকে
পর্বতারোহণে দক্ষ অশ্বের স্থৈর্য নিয়ে
তবুও গরীরা অপেক্ষায় থাকে।


তারা সবসময়ই  অপেক্ষায় থাকে—
যুবরাজের মতো স্বতন্ত্র সৌন্দর্যবোধের
রুচি নিয়ে নয়
তার অপেক্ষায় থাকে
সাতটি তুলতুলে মেঘভর্তি বালিশ নিয়ে নয়
ধূপকাঠির মেয়েলি গন্ধে বাতাস ভরিয়ে দিয়ে—
তার অপেক্ষায় থাকে না
চন্দনের ঝাঁঝালো সুগন্ধীবেষ্টিত হয়ে
ঘোড়ার পিঠে—
তারও অপেক্ষায় থাকে না।


তারা অপেক্ষায় থাকে এবং তাড়াহুড়া করো না।
মানবতা আসতে দেরি হতে পারে—অপেক্ষায় থাকে সবাই
সে তাড়াতাড়িও এসে পড়তে পারে—অপেক্ষায় থাকো।


আধুনিকতার দোলানো বেণীর মাঝে
লুকিয়ে থাকা পাখিদের বিব্রত করো না
তবুও মানুষেরা অপেক্ষায় থাকে
ফুলভরা বাগানের মতো,
পরম রূপের আসনে
তারা আরামে বসতে চায় না —
একটু রুটি,একটু মধু একটু মানবতার অপেক্ষায় থাকে।
আধুনিকতার নষ্ট ফুসফুসের অপরিচিত এই বাতাস
সাবধানে তারে টানতে দাও—
মানবতা কাঁদে, তবুও অপেক্ষায় থাকে।
হিংসার পায়ের কাপড় সরতে থাক— আস্তে আস্তে—
নরম,কোমল ব্যবহারের অপেক্ষায় থাকো।


দুধেডোবা চাঁদ দেখতে তাকে বরং
ব্যালকনিতে নিয়ে যাও—
তার অপেক্ষায় থাকো।
মানবতার সুরা ঢালার আগে
তারে পানি পানের প্রস্তাব দাও
তার বুকে ঘুমিয়ে থাকা তিতির পাখিদুটির দিকে তাকিও না—
আললাহর রহমতের অপেক্ষা করো।
এবং সে মার্বেল পাথরের ওপর গ্লাশ রাখার সময়
আলতো করে তার হাত ধরো না
যেন তুমি তার জন্য বয়ে নিয়ে চলেছো একফোঁটা শিশিরের পানির পরশের অপেক্ষায় থেকেও না।
তার সাথে কথা বলো
যেমন ভায়োলিনে ভীত-কম্পিত তারের সাথে
কথা বলে বাঁশি
যেন তোমরা জানতে, আগামীকাল কী ঘটতে চলেছে—
অপেক্ষায় থাকো মানবতা।


রাতের প্রতিটি প্রহরষিত
তার জন্য ঝলমলে করে তোলো
আর অপেক্ষায় থাকো মানবরা।
যতখন না রাতের অদৃশ্য কণ্ঠ
কানে কানে বলে যায়—
`তোমরা দুজন ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই।`


তাহলে, এবার তাকে ধীরে ধীরে নিয়ে চলো
কাঙ্ক্ষিত, প্রতীক্ষিত মানবতা ও মৃত্যুর দিকে—
এবং অপেক্ষায় থাকো মানবতা
দুই দলের সমঝোতা
নিত্য আসে মানবতা
টুকরো টুকরো সহানুভূতি
নিত্য আনে আনন্দ ও সুখ অনুভূতি
মানবতা নানা রঙে নানা ভঙ্গিতে
ধনী গরীব বৈষম্য ভুলে
আল্লাহ প্রেমে
নবীর প্রেমে
মানবতা আসুক
আধুনিক জীবনবোধ ও সমাজে।।