বিশটি বছর পরে
---------------------------
আজ থেকে বিশ বছর পর হয়ত কোন চশমার দোকানে আমি
লেন্সটা নাকের উপরে ঠিক করতে করতে
আর তুমি চশমাটা চোখ থেকে খুলে তাকিয়ে থাকব
একে অন্যের চোখে অপলক।


একসাথে পাশাপাশি শরীরের হালকা আঁচে পুড়তে চাইব দুজন।
ঠোঁট কাঁপবে ,
চোখের পাতা কাঁপবে,
বুকে হাতুড়ি পেটাবে,
গলার কাছে আটকে যাবে কিছু ভারী উত্তপ্ত বাষ্প।
শুধু তাকিয়ে থাকব অপলক।


এগিয়ে আসব একে অন্যের দিকে, সবার অলক্ষ্যে
পাঁচটা পাঁচটা দশটা আঙ্গুল জড়িয়ে ধরবে একটা আরেকটাকে
বড়শির মত, খাঁমচে তুলে নিতে চাইবে অনেক অনেক চেনা পুরানো কিছু মাংস।


নাহ...
শুধু তাকিয়ে থাকব একে অন্যের চোখে, অপলক।
দিনের আলোয় হাত পা ওয়ালা বৃক্ষ তখন আমরা দুজন।


অনুভুতির ঊর্ধ্বে অন্য কোন জগতে হয়ত তখন ভালবাসার বায়বীয়
চাষাবাদে ব্যস্ত দুজনার আলিঙ্গনে জন্ম নিচ্ছে একেকটা ফুল বাগান।
কিংবা আমার চশমার দোকানে তুমি, কপালে ফুঁ দিয়ে চুল সরিয়ে
চোখে পড়িয়ে দিচ্ছি রোদ চশমা।


এভাবে দেখা হয়ে যায় বিশ বছর পরে
অতল কথার পারাপারে
কিছু দরিদ্র বাতাস আর আমাদের দরিদ্র প্রসঙ্গ একসাথে পাশাপাশি
ট্রেন বাসের ধ্রুব জটের মত জট পাকায় কন্ঠনালীতে।
বুক চিড়ে বেরিয়ে আসা দীর্ঘশ্বাস ছড়িয়ে দেয় গাঢ় অনাসক্ত উষ্ণতা।
শুধু তাকিয়ে থাকি একে অন্যের চোখে অপলক।


অনেক কাছের দুজন অচেনা লোক খোলস ভেঙে বর্ণচোরা তখন।
স্মিত হাসি হয়তবা চারটি ঠোঁটের কোণে।
আমার সিগারেট পোড়া কালো ঠোঁট আর হাসি যদিও আগের মত কামনা
ছড়াতে পারে না,
ঘনিষ্ঠ ঠোঁট কিন্তু হায়, অচেনা।


ভাগ্যিস আজ দেখা হয়ে গেল বিশ বছর পর
পৃথিবীর অন্য রকম একটা দিনে।
ভাগ্যিস বিশটি বছর!
ভাগ্যিস আজকের অচেনা দুজন কেউ কাউকে চেনে না।।


-০৯ মার্চ, ২০১৬