একটি সংসারের গল্প
তোফায়েল আহমেদ টুটুল


মা ওমা ভাত দে ক্ষুধা লাগছে পেটে বিষম,
আমারে চারটা মাছ দিবি ভাতে গরম গরম।
কচুশাঁক আর কত ভাল লাগেনা প্রতিদিন,
মাংস রান্না করে খাওয়াবিনা মা একদিন।
দুধের সাথে একটু চিনি না কলা দিবি দুটে,
ভর্তা আর কাঁচা মরিচ ঝাল লাগে ঠোটে।


সন্তানের প্রশ্নে মায়ের কোন হয়না জবাব,
সংসারে চাল ডাল তেল লবণের অভাব।
নিত্য থাকে অনাহারে অন্ন শূণ্য হাড়ি ঘরে,
উদরে নাই দানা পানি সন্তানে খাবে পরে।
এক থালা ভাত যত্ন করে তুলে অবশেষে,
দিন দিন মা কাল কাটাল থেকে উপোষে।


সন্তানের নিত্য আবদার এড়াতে মায়ের বুলি,
সোনা যাদু লক্ষী বলে মুখে দিল অন্ন তুলি।
তোর বাবা কি বলছে জানিস রতন মানিক,
কালকে নাকি মাছ মাংস আনবে ঠিক ঠিক।
এমনি ছলে মিথ্যে বলে নিত্য নতুন কথায়,
হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়াল মায়েরা অনিদ্রায়।


স্বল্প উপার্জনে বাবা বাজারে গিয়ে হিমশিম,
সস্তা দামে কোনখানে জিনিস পাবে অসীম।
তেল লবণ বাকির খাতায় নগদ চাল ডাল,
মহাজনকে বলছে মিছে দিতেছি এসে কাল।
অপরাধী ভয়ে ভয়ে বাড়ি ঢুকে বেলা শেষে,
সন্তানের চোখ ফাঁকিতে দাড়ায় স্ত্রীর পাশে।


এমন কত সংসার বাংলার বুকে করে বাস,
জীবনে কি আর স্বপ্ন তাদের অন্ন বারোমাস।
ক্ষুধার রাজ্যে রাজা রাণীর অনাহারী প্রজা,
বেঁচে থাকা জীবন বুঝি বিধির দেয়া সাজা।
চোখের সামনে আছে কত প্রতিবেশী এমন,
হয়না মরণ যায়না অভাব ক্ষুধার নিবারণ।