দুঃখিনী বাংলা মা
তোফায়েল আহমেদ টুটুল


ষোল কোটি বাঙ্গালী সন্তানের আমি হলাম দুঃখী জননী,
লাল সবুজের শাড়ীর আঁচল টেনে করে শ্লীলতা হানি।
পাক বাহিনীর বন্দিশালায় যখন ছিলাম আমি পরাধীন,
প্রতিবাদী সন্তানেরা গর্জে উঠে করে দিল আমায় স্বাধীন।
স্বর্গ সুখের মহল গড়ে বিছিয়ে দিলাম শান্তির চাদর,
সন্তানদেরকে ঘুম পারাবো দিয়ে বুকের স্নেহ আদর।
হাসি আনন্দ খেলার ছলে মায়ের কথা আজ গেল ভুলে,
অমানুষ বর্বর হায়েনা যোগ দিয়েছে জালিমের দলে।


আমার বুকে এক সন্তান আগুন জ্বালে দিবানিশি,
আরেক সন্তান এসে বলে মা তোমায় ভালবাসি।
আমার ছেলে হাত বাড়ায় আমার মেয়ের গায়,
ভাইয়ের নিকট বোনেরা ধর্ষিত হয়ে সতীত্ব হারায়।
বড় ছেলে শিশু ছেলেকে অস্ত্র ধরে করে অপহরণ,
মুক্তিপন না পেলে ঠাণ্ডা মাথায় খুনের আয়োজন।
সবাই নাকি আমার সন্তান গর্ব করে ডাকছে মা,
এমন কুলাঙ্গার সন্তানদের কি করে করব ক্ষমা?


জন্ম কি আর দেইনি আমি সালাম বরকত রফিক জব্বার,
আমার বুকে শান্তি পেতে পাইনা কেবল সেই অধিকার।
জাহাঙ্গীর আব্দুর রউফ হামিদুর রহমান নূর মোহাম্মদ,
মোস্তফা মতিউর রুহুলের আজ নেই জানি মায়ের শপথ।
গর্বিত বঙ্গ জননীর কলঙ্ক বিশ্বের বুকে যায় ছড়িয়ে,
লজ্জা ঘৃণায় অপমানে অবনত মস্তিষ্ক আছে নুয়ে।
হত্যাযজ্ঞের তাণ্ডব লীলা রক্ত গঙ্গার স্রোতধারা,
বাংলার মা অতলে ডুবে হয়েছে পাগল আত্মহারা।।