সুখের দুঃখ
তোফায়েল আহমেদ টুটুল


কত সাধনার পর মেট্রিক পাশ করলাম,
উচ্চ মাধ্যমিক স্নাতক পাশ করেছি বাবা,
বলতে পারি নি আনন্দের কথা,
দেখতে পারি নি তুমি কত খুশি হতে,
গর্বে বুক ফুলিয়ে করতে আমার সুনাম।।


কোন চিন্তা নেই আমি চাকরি পেয়েছি বাবা,
জানলে না তুমি কভু ওপারে গেলে চলে,
বুকের ভিতর আত্মচিৎকার শুনি,
মায়না পেলে চোখের কোনে জল আসে,
অভাবের কষ্ট ভুলিয়ে পারিনি করিতে সেবা।।


একটা পাঞ্জাবী কিনে জড়িয়ে দিতাম গায়ে,
মাঘের শীতে প্রচণ্ড কাঁপনিতে একটা চাদর,
দামী একজোড়া পায়ের চটি,
বাজার করতে পছন্দ মত টাকা গুজে হাতে,
সুখের হাসি লেগে থাকা মুখ দেখতাম চেয়ে।।


লাল টুকটুকে একটা বউ আনা স্বপ্ন তোমার,
মর্যাদার উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত গর্বিত পিতা,
আমি কোন যৌতুক চাইনা,
সমাজের আদর্শ প্রতীক অন্যায়ের প্রতিবাদে,
আমার ছেলের জন্য দুয়া করবেন এ অধিকার।।


শহর থেকে বাড়ি ফিরব শুনে পথের বাঁকে,
অবুঝ শিশুর ন্যায় ছুটে এসে বার বার,
অধীর আগ্রহ চিত্তে অপেক্ষা,
অটো রিক্সার হর্ণ শুনে তাকাতে পিছন ফিরে,
এই বুঝি সোনার মানিক আসিবে আমার বুকে।।


এত সুখের দুঃখে বাবা তোমার কথা ভাবি,
কেমন হত আজকে তুমি থাকতে যদি বেঁচে,
আদরের নাতী নাতনী কোলে,
দাদুকে ভাগ করতে সবাই টানাটানি হাত ধরে,
দেখতে তোমার পরিবার আজ অপূর্ব এক ছবি।।


ওপারে তুমি কেমন আছ পাইনা কোন খবর,
অনন্ত সুখ শান্তির অফুড়ন্ত নেয়ামত জান্নাত,
বিধাতা যেনো দেন উপহার,
আমার অতৃপ্ত আশাগুলো তোমাকে নিয়ে,
মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থণারত অন্তর।