*************আসরের কবিতা ও তার কাব্যিকতাঃ ২৮***************
কবিতাঃ  নদী ও প্রেমিক
কবিঃ সুদীপ্ত বিশ্বাস
প্রকাশিত তারিখঃ ১২/১১/২০১৭
***কবি ৪ বছর ১ মাস হল বাংলা-কবিতার আসরে আছেন। কবি আজ পর্যন্ত ১২৬টি কবিতা এই সাইটে লিখেছেন। কবি আসরে নিয়মিত লিখছেন।
---------------------------------------------------------------------------------------------------
কবির লিখিত কবিতাঃ
পাহাড়ের বুক চিরে ঝর্ণাটা নামে
অনেক না বলা কথা আছে নীলখামে।


ঝর্ণারা মিলেমিশে হয়ে যায় নদী
শুনবে নদীর গান, কান পাতো যদি।


ও নদী কোথায় যাও? ছলছল তানে?
দাও নদী দাও বলে, জীবনের মানে।


ঘন্টার ঠুনঠুন, আজানের সুর;
নদী জলে মিশে যায় সোনারোদ্দুর।


ছোটছোট ঢেউ তুলে নেচেনেচে যায়
সব মেয়ে তাই বুঝি নদী হতে চায়?


ও নদী চলেছ বয়ে, নদী তুমি কার?
প্রেমিকটা প্রাণপণ কাটছে সাঁতার।


সাঁতরে-সাঁতরে আরও কতদূর যাবে?
কতটা গভীরে গেলে তবে তল পাবে?


নদীটা যেই না গিয়ে সাগরেতে মেশে,  
প্রেমিক ঘুমিয়ে পড়ে  সঙ্গম  শেষে...
****** কবির এই কবিতাটি বেশ সুন্দর ও অর্থবহ। সমস্ত দিক বিচার করে বলা যায় কবিতাটির কাব্যবোধ যথার্থ। কবিতায় কাব্যিকতার প্রকাশ মেলে। কবির এই কবিতাটি পদ্যরূপে লেখা।
-----------------------------------------------------------------------------------
মাত্রা ও পর্ব  বিভাজনঃ
পাহাড়ের বুক চিরে/ ঝর্ণাটা নামে=৮/৬
অনেক না বলা কথা/ আছে নীলখামে।=৮/৬


ঝর্ণারা মিলেমিশে /হয়ে যায় নদী=৮/৬
শুনবে নদীর গান, /কান পাতো যদি।=৮/৬


ও নদী কোথায় যাও?/ ছলছল তানে?=৮/৬
দাও নদী দাও বলে, /জীবনের মানে।=৮/৬


ঘন্টার ঠুনঠুন, /আজানের সুর;=৮/৬
নদী জলে মিশে যায় /সোনারোদ্দুর।=৮/৬


ছোটছোট ঢেউ তুলে/ নেচেনেচে যায়=৮/৬
সব মেয়ে তাই বুঝি /নদী হতে চায়?=৮/৬


ও নদী চলেছ বয়ে, /নদী তুমি কার?=৮/৬
প্রেমিকটা প্রাণপণ /কাটছে সাঁতার।=৮/৬


সাঁতরে-সাঁতরে আরও /কতদূর যাবে?=৮/৬
কতটা গভীরে গেলে /তবে তল পাবে?=৮/৬


নদীটা যেই না গিয়ে /সাগরেতে মেশে,  =৮/৬
প্রেমিক ঘুমিয়ে পড়ে / সঙ্গম  শেষে...=৮/৬


*** কবির এই কবিতাটি  মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লেখা। ৮/৬ মাত্রায় আছে।
-----------------------------------------------------------------------------------


ছন্দ রীতি- মাত্রাবৃত্ত ছন্দ
মাত্রা গণনার নিয়ম- মুক্ত দল ১  মাত্রা এবং রুদ্ধ দল- ২ মাত্রা।
পর্ব-  ৮/৬ মাত্রায়। অর্থাৎ পূর্ণ পর্ব ৮ মাত্রা, অপূর্ণ পর্ব ৬ মাত্রা।
পঙক্তি- ১৬ টি। সমস্ত পঙক্তি সমমাত্রিক ও সমপার্বিক।
লয়- মধ্যম।
বিশেষত্ব- মাত্রাবৃত্ত ছন্দ শেখার আদর্শ কবিতা।
কবিতার শ্রেণি- রূপক কবিতা।
-----------------------------------------------------------------------------------
কবিতার নামকরণ—
কবিতার সাথে কবিতার নামটি যথার্থ।
----------------------------------------------------------------------------------
কবিতার অর্থ-
পাহাড়ের বুক চিরে যেমন ঝরনা নামে তেমনই অনেক না বলা কথা বালিকার চোখে জল হয়ে আসে। সেগুলি যেন চিরকাল নীলখামে লিখে রাখা হয়। অনেক ঝরনা মিলেমিশে একসাথে নদী হয়ে যায়।
সেই নদীর গান সহজেই কান পাতলে শোনা যায়। আর বালিকারও!
ন দী এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যায় শত  জীবনের কথাকে সাথি করে। এভাবেই এখানে নদীর সাথে মেয়েদের তুলনা করা হয়েছে। প্রেমিক মন যেমন প্রাণপণ সাঁতার কেটে মেয়েটির মন পায় না, তেমনই নদীর বুকে সাঁতার কেটে নদীর গভীরতা মাপা যায় না।
নদী অনেক পথ শেষে সাগরেতে যেয়ে মেশে আর প্রেমিক ঘুমিয়ে পড়ে  প্রেমিকার সাথে সঙ্গমের পর। তাই প্রেমিকা ও নদীর এই মেলবন্ধন এখানে সুন্দর ভাবে প্রকাশিত।
---------------------------------------------------------------------------------
কবিতা ও ভাব-
একদম ঠিক আছে।
----------------------------------------------------------------------------------
ভাষা প্রয়োগ-
অনেক ভালো।
-----------------------------------------------------------------------------------
-------------------------------------------------------------------------------
ছেদ যতি-
প্রয়োগ ঠিক আছে।
--------------------------------------------------------------------------------
অলঙ্কারঃ
যথার্থ।শব্দালঙ্কারে প্রয়োগ আছে।
-------------------------------------------------------------------------------------
বানান-
ঠিক আছে।
------------------------------------------------------------------------------
অনুরোধ-
আপনার এ জাতীয় লেখায় আসর আগামীতে আরও সমৃদ্ধ হবে আশা করি।
-----------------------------------------------------------------------------------
******কবি আমার শুভেচ্ছা নেবেন। ভালো থাকুন।