বুদ্ধি-শুদ্ধি সব হাঁটুর নিচে নেমে এসেছে,
বাবা না বললে টেরই পেতাম না।
ছেলে বেলায় নাকি খুব চৌকস ছিলাম,
তাইতো এক মামা প্রশংসা করে বলেছিল,
"বাঁশের গোড়া থেকে বাঁশই বের হয়, কঞ্চি নয়"
সেদিন ঠিকই বুঝেছিলাম কথাটার কি অর্থ।
কিন্তু আজ মনে হচ্ছে,
মামার উপমাসূচক বাঁশ আমি নই,
আমি বরং কঞ্চিই হয়ে যাচ্ছি।
বুদ্ধি-শুদ্ধি সব হাঁটুর নিচে নেমে এসেছে,
বাবা না বললে টেরই পেতাম না।
পৃষ্ঠা ভরে অংকটা কষার পর
যখন দেখতাম ফলাফল শূন্য
তখনো আমার খারাপ লাগতো
অবহেলার স্বরে গনিতের মাষ্টার মশাই
যখন আমার খাতায় চোখ বুলিয়ে যেত,
তখনো আমার খারাপ লাগতো।
আমার শূন্যের উপর আরো বড় বড়
দুটি শূন্য এঁকে দিয়ে, আড় চোখে
আমার দিকে তাকিয়ে মাষ্টার মশাই
যখন বলতো, " মাথায় কি গোবর -
বুদ্ধি-শুদ্ধি বলে কি কিছু নেই।"
সত্যি বলছি,তখন একটুও খারাপ লাগতো না আমার।
কারন এতদিনে আমি বুঝে গেছি
বুদ্ধি-শুদ্ধি হাঁটুর নিচে আমার।
ভেবেছিলাম ও মুগ্ধ হবে,
কচুরি ফুল হাতে গিয়েছিলাম তাই।
দেখে ও বলল, আমি গরু না ছাগল?
একি কচুরিপানা!!!বুদ্ধি-শুদ্ধি নাই???
পকেট আমার তখন গড়েরমাঠ
ফুল কেনার পয়সা অব্দি নাই।
বুদ্ধি-শুদ্ধি যে হাঁটুর নিচে নেমে এসেছে
ও না বললে বোধয় টেরই পেতাম না।
ও আজ নেই, চলে গেছে আমার সীমান্ত পেরিয়ে,
মাষ্টার মশাই ও বুড়ো হয়েছে ঢের
কে নেবে আমার বুদ্ধির পরীক্ষা ফের,
আর বাবা তো সেই কবে লটারির টিকিট
পেয়ে ওপারে আজীবনের জন্য সেটেল হয়ে গেছেন।
আজ বুদ্ধি আমার উপচে পড়ছে,
বালিশ চাপা দিয়েও আটকাতে পারছি না।
এখন শুধু নিজেকে নিয়ে উপহাস করে সময় কাটাই।


২৪/০৪/২০১৫