ছেঁড়া আঁচলে চোখ মুছে মা শুকাইছে আঠারো বছর ধরে,
হাফিজুল নামের হারানো ছেলেটা ফিরা আইছে ঘরে।
বুকের মানিক ঘরে ফিরছে, ভিটায় জ্বলবে বাতি
লগে আইছে পুতের বৌ, দুই নাতনি আরো আছে নাতি।
বিয়ে-শাদী কেমনে অইলো, পাড়া পড়শির জানা নাই
পাড়া-পড়শি তাই বায়না ধরছে আবার বাজুক সানাই।
বর-কনেরে তাই পিঁড়িতে বসাইছে কাঁচা হলুদ দিয়া।
পোলাপান লইয়া নাকি বাপ-মার অইবো বিয়া।
হাফিজুল তখন ষোলো সতেরো, এক জাদুকরে গেলো তারে লইয়া
রাতারাতি সে কই হারাইলো , বাপ-মায়রে গেলো না কইয়া।
ফকির-ফক্কর তাবিজ-কবজ মায়ে আরো কতো কি যে করে,
শেষে হাল ছেড়ে দেয় সবাই, বছর দুই খোঁজা খুঁজির পরে।
কতো জনে গত হয়েছে, আইছে কতো নতুন মুখ
হারানো পোলা ফিরা পাইয়া জুড়াইলো মায়ের বুক।
উঠোন জুড়ে আসর বসেছে, আঠারো বছরের গল্প শোনাবে রাতে
কারমু কামুক্ষায়ও গিয়াছিলো হাফিজুল জাদুকরের সাথে।
নজর বন্দী, শূন্যে ভাসা আরো অনেক কিছুই সে পারে
মরার আগে জাদুকর, সব শিখাইয়া গেছে তারে।
জাদু দিয়ে পেট চলে না, হাফিজুল তাই শহর পানে যায়
জাদুবিদ্যা যার পেট ভরা, সে ভণ্ডামি-টাই ভালো পায়।
শহরের এক মোড়ে দাঁড়িয়ে ওষুধ বেচে, ভুলে গেছে লাজ
জাদু দেখিয়ে লোক জমানোই এখন হাফিজুলের কাজ।


মিরপুর ১, গোলচত্তর
১১/০৪/২০১৫