নিদ্রা হইতে উঠিয়া আড়মোড়া ভাঙ্গিয়া
যেই খুলিলাম  পত্রিকার ভাঁজ
খবর দেখিয়া চক্ষু হইলো চড়ক গাছ
সরকার সবাইকে দিয়াছে ফ্রিতে
পঞ্চাশ লাখ করিয়া টাকা। 
আর থাকিবে না পকেট ফাঁকা!
মোবাইল খুলিয়া দেখি, ঘটনা সত্য
একাউন্টে জমা হইয়াছে পঞ্চাশ লাখ।
খুশির খবর বউকে বলিবো?
 না। না।সারপ্রাইজ দিব। এখন থাক।


স্বর মোলায়েম করিয়া কহিলাম
হ্যা গো আমার ময়না পাখিটা
কড়া করিয়া আনিবে কি
 এক কাপ গরম গরম চা।
বউ দেখি হাসে পিট পিট
মেজাজখানা নয় খিট খিট।
হাসিয়া কহিলো, পারিবো না বাপু
রোজ রোজ ঠেলিতে এই চুলা
যতই ঝুলাও মুলা
তুমি কি ভাবিয়াছো?
আমার একাউন্টেও ঢুকিয়াছে 
টাকা পঞ্চাশ লাখ!
রান্না বান্না আজি চুলায় যাক
মাড়াইবো না আর রান্নাঘরের ছায়া
আমার জন্যে আনিয়া দাও দেখি
ঘিয়ে ভাজা পরোটা আর 
আস্ত এক বাটি খাসির পায়া।
ঢোক গিলিয়া কোনমতে কহিলাম
ঠিক আছে তবে তাহাই করি
আগে এক খানা ফোন করি দরকারী?


হ্যালো! মফিজ মন দিয়া শোন
আজ আমি অফিস করিবো না
স্যারকে বুঝিয়ে বলিস ঠিক ঠাক।
স্যার! মাপ করিবেন
আর করিবো না এই পিওনের চাকরি
সরকার আমাকেও দিয়াছে পঞ্চাশ লাখ।
ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া কহিলাম
ঠিক আছে। ঠিক আছে।এখন ফোনটা রাখ।


চটি পায়ে দিয়া আসিলাম রাস্তায়
দেখি কোন একটা রিক্সা নাই।
খালি পেটে কেমনে হাঁটিয়া যাই!
ও ভাই রিক্সা ওয়ালা? যাইবে না কি?
ঐ সামনের বাজারের মোড়
লাগিলে ভাড়াটা না হয় দিব বাড়াইয়া।
আপনি থাকেন এই ভাবে দাঁড়াইয়া
আজি কেহ রিক্সা চালাইবে না
শোনেন নাই বুঝি? সরকার দিয়াছে
সবাইকে টাকা পঞ্চাশ লাখ!
বুঝিয়াছি। আর বলিতে হইবে না
তাহার চেয়ে খুশিতে ঠেলায়
আজিকে একটু হাঁটাই যাক।


বাজারে আসিয়া দেখি
এ কি! বন্ধ যত বিপনী বিতান
নাই সেই চির চেনা কোলাহল প্রাণ!
বাজারতো একদম রহিয়াছে খালি!
জন মানুষের চিহ্ন কোথাও নাই?
পঞ্চাশ লাখ করিয়া পাইয়া 
খুশিতে ঠেলায় আরাম কেদারায়
ঘুমিয়াইয়া গিয়াছে সবাই?


( অন লাইন থেকে পঠিত একটি গল্পের কাব্য রুপ দেয়ার প্রয়াস। রম্য হইলেও এতে অর্থনীতির বিশেষ কিছু জিজ্ঞাসা নিহিত আছে।)