হাজার বছর ধরে উল্কাপিণ্ডের মতো ধেয়ে
আসা,
ছুটে চলা পৃথিবী, কোথায় তোমার সে
গতি আজ?
গোটা পৃথিবী থমকে গেছে আজ,
থেমে গেছে আজ তার সকল পথ পরিক্রমা,
স্তব্ধ, স্থবির হয়ে নিষ্পলক দাঁড়িয়ে আছে
ঠাঁই দাড়িয়ে আছে স্ট্যাচুর মতো;
কি হয়েছে পৃথিবী তোমার?


কেনো আজ প্যারালাইজড হলে তুমি?
তোমার চলৎশক্তি নিয়ে হাজারো প্রশ্ন
আজ মানুষের মনে।
কেনো হারিয়ে গেছে তোমার চলৎশক্তি?
এতোটুকুও নড়চড় নেই কোনো?
তোমার জন্য আজ চলে না কোনো
ঠেলাগাড়ি,ভ্যানগাড়ী, বাস, রিকশা
সবকিছু থেমে গেছে আজ।


তুমি তো গাছপালা, মানব, পশুপক্ষী, নদী
সাগর,সমুদ্র-সৈকত নিয়ে সুপারসনিক
গতিতে ছুটে চলছিলে পৃথিবী।
তবে কেনো হঠাৎ করে ক্ষুব্ধ হলে তুমি?
তবে আজ কেনো হাহাকার আর শূণ্যতা
বাসা বেঁধেছে তোমার অন্তরে?


কেনো তোমার এ বিরূপ আচরণ?
কেনো এ বিক্ষুদ্ধতা, কেনো এ অনশন?
তুমি কি আবার নতুন করে আবির্ভূত হতে
চাও সকলের মাঝে নতুন পরিচয়ে?
তখন কি তোমাকে আমরা চিনতে পারবো
আমাদের হাজারো কাজের ভিড়ে সকাল,
সন্ধ্যা, সাজে?
নাকি গুড়িয়ে দেবে তুমি সব যা কিছু আছে
চারপাশে তোমার?
উড়িয়ে দেবে কি তুমি সব পাখিদের বন
থেকে?
শুনবো না কি আর কলরব, কলকাকলি
তাদের ?


ক্ষুব্ধ পৃথিবী আজ তোমার কাছে হাজারো
প্রশ্ন রেখে যেতে চাই।
সকল নিয়ম নীতি ভঙ্গ করে অনেক প্রাপ্তির
পরও তোমার ওপর কৃত অত্যাচারে অতিষ্ঠ
তুমি কি আজ মানবের পরে?
তুমি কি নতুন এক পৃথিবীর আগমনী বার্তা
ও রূপ নিয়ে হাজির হবে আমাদের মাঝে?
কেনো এ মান অভিমান বলোনা পৃথিবী?
আজ বড়ো অসহায় আমরা।


একবার চোখ খুলে, মুখ তুলে তাকাও না
প্রিয় পৃথিবী আমাদের দিকে!
ফিরিয়ে দাও আমাদের সেই স্বাভাবিক
জীবন।
শুনতে চাই আবারো গাড়ির শব্দ, বহতা
নদীর কলতান ;
দেখতে চাই নানা রঙের ফুলে সজ্জিত
ফুটন্ত ফুলের বাগান;
দেখতে চাই রমনীর খোপার ফাঁস খুলে
চুল ছেড়ে হেটে যাবার দৃশ্য;
দেখতে চাই একদল বালিকার হাসিখুশি
মুখ;
শুনতে চাই ভরদুপুরে গাছের ডালে ঘুঘু
পাখির ঝুমুরঝুমুর তালে গেয়ে ওঠা গান।


হে ধরিত্রীপুরের চির অধিকারী
ক্ষমো আমাদের সকল অপরাধ
মোচন করো সকল পাপ, তাপ আর ক্ষমা
করো সকল মানুষ কে।


হে প্রিয় পৃথিবী তোমাকে নিয়েই আমরা
আগের মতোই
থাকতে চাই সুখে, মহাসুখে,শান্তিতে
তোমার বিক্ষুব্ধ মনে হাসি ফুটিয়ে আবার
উদ্ভাসিত হোক আলোর ঝলক;
কোলে তুলে নাও, জড়িয়ে ধরো বুকে,
সবাইকে আবার করো হে আলিঙ্গন ।