কোন এক ঈপ্সিত মুহূর্তে
পশ্চাতের অন্ধকারকে কঠোর হাতে ঠেলে
যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়
আমার আমিকে ফিরে পাওয়া,
সেই স্বর্গেশ্বরী মমতাময়ী
মা আজ নেই।
তার অস্তিত্ব আমার অস্তিত্বে, আমার কল্পনায়।
আমার প্রতিটা শিরা, উপশিরা,
বহমান রক্ত কণিকায়।
যার নিবিড় স্পর্শে আমি জেগে উঠতাম,
যার উষ্ণ সান্নিধ্য
আমার বেঁচে থাকার ইন্ধন যোগাত,
সেই সঞ্জীবনী সুধা
আমরণ বাঁচার রসদ আর নেই।
মৃত্যুর করাল থাবা গ্রাস করেছে
তার শারীরিক অবয়ব।
হারিয়ে গেছে সে দূর থেকে দূরে-বহুদূরে,
ফিরবে না কখনও এই বেসামাল ভূমিখন্ডে।
তার রেখে যাওয়া সম্পদের ভারে
নুব্জপ্রায় সন্তানেরা
কেবলই চোখের জলে বুক ভাসায়।
থেকে থেকে অকস্মাত বুকের ভেতরটা
কেমন শূণ্য হয়ে যায়,
বুক চিরে বেরিয়ে আসে অপূর্ণ দীর্ঘশ্বাস।
মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে-
মাগো কোথায় আছো?
কেমন আছো?
এখন আর দূর্বল হাত বাড়িয়ে কেউ বলে না
'বাবা আমাকে ধর; আমাকে উঠাও।'
কত আনন্দ- বেদনা, দুঃখ- কষ্টের
পাঁচমিশালী অনুভবে ভরা ছিল সেই দিনগুলি-
আজ আর কোন আনন্দ নেই,
কোন ভাল লাগা নেই।
শুধুই বেদনা, শুধুই কষ্ট,
আর শূণ্য দৃষ্টি মেলে চেয়ে থাকা দিগন্তের পানে।


(কবিতাটি আমার লোকান্তরে হারিয়ে যাওয়া স্বর্গীয় মাকে উদ্দেশ্য করে লেখা। যার স্মৃতি এখনও আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় শত কর্ম ব্যস্ততায়। আজ কবিতার আসরে আমার ৫০ তম কবিতা এটি)