বাংলার পথে শিশির ভেজা, কাঁচা মাটির গন্ধ,
নরম কুয়াশা জড়িয়ে ধরে প্রভাত-জাগা সন্দ।
গাছে গাছে পাখির গুঞ্জন, দোয়েলের ওই গান,
শিশুর কণ্ঠে জেগে ওঠে সুখে-দুঃখে প্রাণ।
ধানের ক্ষেতে নরম বাতাস, দোলায় সোনার ঢেউ,
আলোর মতো হাসে কৃষক, ঘামে ভেজা ঢেউ।
আকাশ জুড়ে কাশফুল হাসে, ভোরের পাখি ডাকে,
বৃদ্ধ মায়ের কাঁথা বোনে — রূপকথা এই মাকে।
গাঙের ধারে মাছ ধরে যে, পেটের ক্ষুধা বুকে,
মাটির ঘরে দীপ্ত শিখা, ভালোবাসার সুখে।
চোখে তার জল, তবুও হাসে, গান গায় জীবনের,
এই বাংলার প্রতিটা রঙ্গে সুর বাজে হৃদয়ের।
নদীর স্রোতে কান্না মিশে, রাখে শত বেদন,
জন্মভূমির রঙিন ক্যানভাসে আঁকে হাজার প্রেম-মন।
রানীর সাজে সেজেছে দেশ, চরণে ফুল ঝরে,
কবির কলম, গীতিকন্ঠে চিরকালই ধরে।
গ্রামের পথে জ্যোৎস্না নামে, বাঁশির সুরে মায়া,
বুকের ভেতর হারিয়ে থাকা প্রেমের পুরনো ছায়া।
গরিব বাবার শেষ টাকায় কিনে আনা সেই হাসি,
মেয়ের মুখে অন্ন তুলে — সোনালি এক গ্রাসি।
ভাঙা চালে স্বপ্ন জোড়া, পাটাতনের ঘর,
তবুও তাতে ভোরের আলো — বাজে জীবন কর।
প্রতিটি ইট, প্রতিটি ধূলা গাঁথা প্রেম-দরদে,
বাংলার বুকেই জমে আছে আকাশজোড়া সুধা।
পাখির ছায়া, পাতার স্নেহ, মাটির নরম কোল,
এই বাংলায় হৃদয় থাকে, চোখের ভেতর জল।
যে যার মতো কাঁদে হাসে, সুখ দুঃখে বাঁধা,
মানুষ যেন রঙিন ছবি, রূপের অদ্ভুত সাঁধা।
তাইতো কবির চোখে জ্বলে অশ্রু মাখা লাইন,
এমন রূপে, এমন গন্ধে খুঁজে পায় যে ছায়া-ছাইন।
এই বাংলার মাটি বুকে লেখা থাকে নাম,
রূপশি বাংলা, প্রাণের ধ্বনি, সবার হৃদে ঠাঁম।