তখন বয়স আমার স‌বে ১২,
‌ঠিক ক‌রে‌ছেন,বাবা দি‌বেন বি‌য়ে
সদ্য ফুটন্ত ফুল আ‌মি
কর‌বোটা কি এসব দি‌য়ে?
বাবা!মা!মা‌সি!
কর‌বো না আ‌মি বি‌য়ে,
‌লেখাপড়া ক‌রে যে‌তে যাই দূ‌রে এ‌গি‌য়ে।
এম‌নকি ধ‌রে‌ছি আ‌মি সবার চরণ
‌কেউ শু‌নে‌নি আমার বারণ।
কাজের কাজ হয়‌নি কিছু,
‌মে‌নে নিলাম মাথা ক‌রে নিচু।
গরীব ঘ‌রের মে‌য়েরে মা তুই,
‌তো‌কে নি‌য়ে বড্ড চিন্তায় থা‌কি
‌বি‌য়ে দি‌লেই আপদ থে‌কে বাচি!
‌দি‌লো আমায় বি‌য়ে,
পূর্ব পাড়ার মকবু‌লের সা‌থে।
আমার বয়স বা‌রো,ওর বয়স ত্রিশ
কেউ শু‌নে‌নি আর্তনাদ আমার,
শু‌নে‌নি আমার না‌লিশ।
‌বিদায় নিলাম,‌গেলাম স্বামীর বা‌ড়ি।
খু‌কি স্বভাব ছে‌ড়ে হ‌তে হ‌বে পাক্কা ঘরনী।
‌বি‌য়ের বছর ক্ষ‌নেক প‌রে,
আ‌লো‌কিত ক‌রে অয়ন আস‌লো মো‌দের ঘ‌রে।
এখন তের বছর‌ে দা‌য়িত্ব গে‌লো আরও বে‌ড়ে।
শিশু হ‌য়ে কি ক‌রে শিশুর দা‌য়িত্ব নি‌বো
‌কে দি‌বে এই আশা?
এ যে‌নো বু‌কে বাঁধলো আ‌রেক হতাশা।
‌রোগা,অপু‌ষ্টি শিশুর জন্ম দি‌য়ে
‌চেষ্টা ক‌রে‌ছিলাম সাম‌লে নি‌তে,
হঠাৎ বাবা আমার ঘুমি‌য়ে গে‌লো
‌কি যে‌নো একটা রো‌গে!
আমার সা‌থের সেই মে‌য়েরা
এখনও ক‌রে‌নি বি‌য়ে
শু‌নে‌ছি রিতা ডাক্তা‌রি প‌ড়ে
ঢাকার শহ‌রে গি‌য়ে ,
আমারও স্বপ্ন ছি‌লো,ম্যা‌জি‌স্ট্রেট হ‌বো
হ‌বো বড় অ‌ফিসার।
হয়‌নি পূরণ কিছুই,স্বপ্ন নেই আর।
স্বামী,চার সন্তান নি‌য়ে কো‌নো মতে সংসার
‌কো‌নো দিন এক‌বেলা,‌কো‌নো দিন দু‌-বেলা
আবার অন্ন‌বিহীন চ‌লে আহার!
‌যেই বয়‌সের পড়ার কথা,ঘু‌রে বেড়া‌নোর কথা
‌সেই বয়‌সেই ভে‌ঙ্গে‌ছে শৈশ‌বের জড়তা।
এখন আমার বয়স কু‌ড়ি
‌দেখ‌লে ম‌নে হয় আ‌মি আ‌শির বু‌ড়ি!
‌পোড়া কপাল ভাগ্য আমার,
অন্য কো‌নো মে‌য়ের ভা‌গ্যে ঘ‌টেনা যেন‌ আর।