বহুকাল আগে-
আমার নাকে তখনও বিন্দু বিন্দু জলকনা জমতো,
আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়।
আমার নাকের ডগায় শিশির বিন্দুর মতো জল কণা জমতে দেখে-
এক পুরুষ বলেছিলো,


"হালকা শিশির বিন্দু,ডগাতে জল ভাসা,
রোদ্রোস্পর্শে মুক্তা ঝিলিমিলি করে।
বিন্দু বিন্দু জল রোদের আভায়,
অতসীফুলের মত হলুদাভ সোনা ঝড়ে-
যেন পুণ্ডরীকপত্র পরে বিন্দু বিন্দু জল.....
মুক্তা তরঙ্গ ঝলমল....
কোন ক্ষণে যদি যায় ঝড়ে?
লিখে দিবো নক্ষত্রের মত মৃত্যু-
মৃত্যুবধি সে জল চোখের আলোর বাইরে গেলে!"


বলেছিলো-
"বিশাল সাগরের বুকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জমে থাকা,
গড়িয়ে পড়া বিন্দু বিন্দু জল;
মহাকালের গর্ভে চোখের পলক-
তোমার সভ্যতা,পৃথিবীর ইতিহাসে আমি
পাবো নাতো ঠাঁই,
হীরা-মানিক,মুক্তা-জহরত তাতেই........
এশিরিয়া,বেবিলল,লেলিনগ্রাদ আজ ছাঁই!
এই পৃথিবীর ইতিহাসে আমি স্থান চাই-
ক্ষুদ্র বালুকণা আমি তার চরাচরে........


মৃত্যুবধি ছুঁতে চেয়েছি,বিশাল সাগরের বুকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জমে থাকা,
গড়িয়ে পড়া বিন্দু বিন্দু জল!"


বলেছিলো-
"যে নারীর নাকে জলের বিন্দু শিশিরের মতো জমে-
তাকে একজন খুব ভালবাসবে।"
সেই পুরুষ তুমি ছিলে।
সেই নর ও নারীর মধ্যেও ভালবাসার সম্পর্ক ছিলো!
সেদিনের কথা শুনে আমি ভীষণ লজ্জা পেয়েছিলাম,
আর সেদিন থেকেই তোমার জন্য আমার অপেক্ষার প্রহর শুরু হয়েছিল।



এখন আমার চুল ধূসর হতে শুরু হয়েছে, মুখের ত্বক খসখসে হতে শুরু হয়েছে,
অথচ আমার নাকের ডগায় এখনও-
বিন্দু বিন্দু ঘাম শিশির কণার মতো চিকচিক করে!
আমি আর কত অপেক্ষা করব?
রাত্রী গভীর হলে,অশ্রুধারার নোনা গঙ্গাজলে
অথচ দিনের আলোর অলক্ষ্যে সে অচ্যুত জল!
আজো আঁখি ছলছল.......আহা! টলমলে বিন্দু বিন্দু জল...............