তৃতীয় পর্ব
ফকির শুধালো, স্বামী কি তোমার আহার করেছে আজ?
তারে দেখলাম ঘেমে একাকার করে হারভাঙা কাজ।
'ছাড়ো তার কথা, সে ভাবনা মোর; তুমি বসে খাও সুখে
অন্দর হতে ঘুরে আসি আমি পান দিতে হবে মুখে
সেই সাথে আরো চাল কড়ি কিছু লয়ে আসি তোমা তরে
যাবার সময়ে ঝোলা পুরে নিও যত খুশি মন ভরে'।
গরীব কানাই ভাবে মনে মনে সমাদর কেন এত??
আগে তো কখন হয়নি এমন গেছি ভুখা ফিরে কত!
হিসাব মেলেনা সাত পাঁচ ভেবে, তাই পিঠা নাহি খায়
এদিকে আড়ালে দাঁড়ায়ে বিনাশী বিনাশ দেখিতে চায়।
ভিখারি বুঝিল আহার যাবেনা কিছুতে এখন পেটে
তার চেয়ে ভাল ঝোলা ভরে লয় খাবে পরে চেটে-পুটে
মা মা ডেকে বলে- আজ তবে যাই, খাব পরে ক্ষুধা পেলে
কার ক্ষতি মাগো, কে যে করে ভবে বুঝিবি সময় হলে।
চুপিচুপি বধূ দেখিল সবটা বাঁধ সাধিল না তারে
মনে মনে ভাবে,এই ভাল হলো মরুক আপদ দূরে।
পরের মরণ রচিতে রচিতে শয়ন কক্ষে এসে
শরীর এলিয়ে কল্প জগতে কী এক আবেশে মেশে
আকাশ কুসুম কল্পনাতে সে হারা হয়ে যায় দিশে
ক্লান্ত নয়ন ডুবে যায় তার গভীর ঘুমের দেশে।