(প্রথম পর্ব)
কানাই ভিক্ষু ভিখ মাগে রোজ পায়ে হেঁটে গাঁয়ে গাঁয়ে
ময়লা বসনে মলিন বদনে গন্ধ ছোটায়ে গায়ে;
হাতে লাঠি আর কাঁধে লয়ে ঝোলা, চলে আপনার মনে
কোথা ভিখ পায় কোথাও না পায় হাত পেতে জনে জনে।
মা মা বলে ডাকে, নত মুখে বলে- ভিখ দাও কিছু মোরে
অনেক রয়েছে তোমাদের ঘরে দানো কিছু মোর তরে।
সব কথা শেষে, এক কথা বলে, কানাই উচ্চ স্বরে-
হায়! কার ক্ষতি, কে করে গো বিধি, যার ক্ষতি সে-ই করে!


নিত্য প্রভাতে কানাই ভিক্ষু রায়েদের বাড়ি ওঠে -
একই ভঙ্গে হাত পেতে রয় একি বুলি ফোটে ঠোঁটে।
রায়ের বেটার রূপসী বধূয়া শুনে বাণী হেসে মরে-
হায়! কার ক্ষতি, কে করে গো বিধি, যার ক্ষতি সে-ই করে!
বেশিদিন হায় থাকেনা সে হাসি ক্রোধের অনলে জ্বলে,
নিত্য দিবসে মনে হয় যেন উপহাস করে চলে-
একদিন বধূ মনে মনে ভাবে বোঝাব ফকির তোরে
কত ক্ষতি কার কেবা করে তার মিলাবি হিসাব পরে;
যেমন ভাবনা তেমন কার্য ফন্দি আঁটিল মনে
কতক বর্ণে কতক বচন টের পাবে এই ক্ষণে!
রোজ পোড়া মুখো এক কথা কয় অসহ্য লাগে খুব
এমন শিক্ষা দিতে হবে যেন চিরকালে হয় চুপ,
বহু চিন্তায় পথ পেল খুঁজে ঠিক জবাবের পালা
এবারে হবেই বিষেতে বিনাশ এই ভিখারির জ্বালা।
ফাগুনের রাত জেগে জেগে বধূ করিল নানান পিঠা
পলাশের প্রাতে পথ চেয়ে থাকে বিষাক্ত মন কোঠা।
বেলা বেড়ে চলে তবু যেন আজ ফকিরের দেখা নাই
সময় চলেছে সময়ের বেগে অপেক্ষা বাড়ে তাই।