জীবন দেখেছো তুমি? পেয়েছো জীবনের স্বাদ?
জীবন দেখেছি আমি। দেখেছি তার বীভৎস সুরত।
জীবন দেখেছি ক্রন্দনরত ভিখারীর করুণ মিনতি ভরা কণ্ঠে-
হার জিরজিরে কঙ্কালের ভিতর থেকে বদ নসীবের প্রতিবাদে।
কারো হাত নেই, পা নেই কারো, অন্ধত্ব হয়েছে কারো আজন্ম সাথী।
অসম্পূর্ণ শরীর দু-হাত তুলে মৃত্যু কামনায় রত থাকে নিয়ত;
এ অনন্ত বিষাদে ভরা আহাজারি যেমন তোমরা শোন না
তেমন পৌঁছে না স্বর্গের দ্বারে।
থার্মো-মিটারের পারদের মত অসুখও এদের ছোঁয় না;
জমে থাকে, গাঁ বেয়ে ওঠে কিন্তু কাঁচের দেয়ালে লাগে না
বাইরে থেকে যার সবটুকু দেখা যায়।
মারণ কামড় দেয় যে ভাইরাস সেও যেন
অচ্ছুত অবহেলায় ঘৃণা ভরে দূরে সরে যায়-
তাইতো হারের গারদে পরাণ বাঁধা থাকে ছাড়পত্রের অভাবে।
হা রে জীবন!
জীবন দেখেছো তুমি?
জীবন দেখেছি আমি। হরেক রকম জীবন।


জীবন দেখেছি ধর্ষিতা ললনার গগন বিদারী আর্তনাদে-
লুটেরাজ হায়েনা যার সর্বস্ব লুটেছে,
কেড়ে নিয়েছে জীবনের সমস্ত ইচ্ছা-স্বপ্ন,
খুবলে খেয়েছে কুকুরের মত আশা-আকাঙ্খার জীবাশ্ম।
শিরায় শিরায় যার ফুটন্ত পানির মত টগবগে রক্তের উত্তাপ-
জীবন দেখেছি তারই ভীত সন্ত্রস্ত অঙ্গারিত কয়লার মত লোহিত নয়নে-
বাঁচার বাসনা যার উগ্র কামনার আগুনে পুড়ে ছাড়খার;
সান্ত্বনার বানী বিঁধে তীরের ফলার মত বুকে;
তবুও পথের কিছু শৃগালের চোখ কু-দৃষ্টিতে ব্যভিচার করে,
যখন মুখ গুঁজে হাসে নরকের যন্ত্রণা দিতে-
তখনই মস্তকে জ্বলে ওঠে মরু সাহারার সূর্য
আঁখি ফেটে আসে তার-ই উত্তাপের অগ্নি রাশি;
অন্তরের সমস্ত গরল ঢেলে দিয়ে রাজপথে
তাপিত হৃদয়ের জ্বলন্ত লাভার স্রোতে
ভাসিয়ে দিতে চায় মর্তের সব আবর্জনা;
জীবন দেখেছি এই ললনাদের সাহসী ঝংকারিত কণ্ঠে-
জীবন দেখেছি প্লাকার্ড হাতে মুখরিত মিছিলে তার অগ্রণী ভূমিকায়।
জীবন দেখেছো তুমি?
জীবন দেখেছি আমি। হরেক রকম জীবন।