অভাব আমার পিছন ছাড়ে না কভু
ছায়ার মত থাকে চিরসাথী হয়ে,
এত খাটাখাটি কত ঘাম ঝরে তবু
টানাটানি থাকে; অভাব গেছে যে সয়ে।
মনে পড়ে সেই বাল্যকালের কথা
ক্ষুধার জ্বালায় গামছা বেঁধেছি পেটে,
শূন্য পাতিল চুলায় চাপায়ে মাতা
বলেছে আমায়,‌‍‍‍‌‌‌‌‌‌'দেরি নাই বাছা মোটে
এই এখনই ভাত হয়ে যাবে বাপ্
তারপর খাবি যতখুশি পেট ভরে'
আঁচলে যায় না লুকানো ব্যথার তাপ
আমারে ভুলাতে মাতা মিছা কথা জোড়ে।
কত যে ব্যাকুল মাতা পথপানে চায়
দুপুর গড়ায়ে সন্ধ্যা আসে যে নেমে;
ক্লান্ত শরীরে বাবা ঘরে ফেরে হায়
দিনান্তে চোখে জলাহারে ঘুম নামে।
আমার জীবনে বড়দিন ঈদ পূজা
ছিলোনা কখনো উল্লাস উৎসব-
নতুন জামার বাসনা কেবল সাজা
হয়ে যে পরাণে বিঁধেছে আশৈশব।
আমার অসুখে পিতা-মাতা ঘুমহীন
বদ্যি জোটেনি অর্থ-অভাবে হায়
পেয়েছি অপার স্নেহের রাত্রি-দিন
আরোগ্য এনেছে পরম মমতায়।
জনক-জননী বয়েসে পড়েছে নুয়ে
কতই যে ব্যাধি বসত গড়েছে দেহে
দিনে দিনে যায় সোনার শরীর ক্ষয়ে
হাউমাউ করে কাঁদতে পরাণে চাহে।
আমি তো পারিনা সোহাগে সারাতে রোগ
বদ্যি-পথ্য মিলাতে পারি না কিছু
অভাব নামের বিষে যতো দুর্ভোগ
মরণের আগে বুঝি ছাড়বে না পিছু।