রঙ্গমঞ্চে নর্তকীতে হাসছে প্রতিনিশ--
কেউ জান'কি তার বুকেতে কত দুঃখের বিষ?
মুখে'যে তার রঙ মেখেছে, গায়ে মেখেছে ঘ্রান
স্পর্শকাতর অঙ্গে নাচে বের হয়ে যায় প্রাণ।
রঙ্গমঞ্চে উঠছে যখন জ্বলছে রঙীন লাইট
দুঃখ-কষ্ট হৃদয় মাঝে করতে থাকে ফাইট।
মধ্য রাতে বান ডেকে যায় নগ্ননৃত্য দেখে
উন্মোত্ত ও পাগল সবাই কামুক সুরা মেখে।
বিশাল তনু অল্প পোশাক যন্ত্রে তোলে ঝড়
রোজ নিশিতে ঝংকারিছে ছেড়ে বাড়ি-ঘর।
রাখছে মুখে কৃত্রিম হাসি ছন্দবদ্ধ নাচ
বুকের ভেতর যায়'রে ফেটে অন্তরেতে বাঁজ।
অন্ধকারে যাকে পেতে হাজার টাকা গোনে
দিনের আলোয় কেউ'না তাকে আপন করে চেনে।
এই বাইজীও জন্মে ছিল তোমার আমার মত
অভাব তাকে লেপ্টে দিছে কালি আছে যত।
মায়ের কোলে এসেছিল আমরা আসি যেমন
মা..মা বলে ফিরত ডেকে তোমরা ডাকো তেমন।
দুগ্ধ পানে তৃষ্ণা পেলে করতো কলরব
আমরা যেমন সব পেয়েছি পায়নি সে তো সব।
কিশোর কালে তোমরা যখন খেলছ মাঠের পরে
অন্ধ বাপের হাতটি ধরে সে যায় দ্বারে দ্বারে।
ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্যে সে যে ভিক্ষাবৃত্তি ধরে
জীবন যুদ্ধে জয়ি হতে রইল'না আর ঘরে।
ক'দিন পরে বাপজিও তার  গেল পরপার
ছায়া দেওয়ার এ জগতে রইল না কেউ আর।
আকড়ে ধরে লতাপাতা, জাপটে গাছের ডাল
বাঁচতে চাহে এই জগতে তালে রেখে তাল।
পরিশেষে ক্ষুধা তাকে করল ঘরের বার
ঠোকর খেল পথে-ঘাটে নাইরে হিসেব তার।
সবাই তারে দেখার আগে শরির দেখে আগে
মাংস পেতে পুরুষ গুলোর শত'না ছল জাগে।
পাশকাটিয়ে কত'টা দিন বাঁচিয়ে রাখা যায়
হাতের পরে হাত বদলে যাত্রায় হলো ঠায়।
ইচ্ছের বুকে ছুরি মেরে দোলায় শরির খান
একটুখানি বায়ে গেলে ক্ষুধায় মারে টান।
সংসারেতে ঠাই নাইরে এই সমাজে বলে
রোজ নিশীতে সমাজপতি থাকে পায়ের তলে।
বদন দিয়ে নিতম্বেতে করমর্দরত
সবচেয়ে তা উপাদেয় বাধা পড়ুক যত।
মক্ষিরাণী, বারবণীতা শত বিশেষণ
দুঃখ গুলো গুমড়ে কাঁদে, ডুকড়ে ওঠে মন।
সারমেয় দল মাংস নিয়ে যেমন করে ছোটে
হাড্ডিখানার বাকি জীবন ভাগাড়টা'ই জোটে।
চোখে যে'তার স্বপ্ন জ্বলে মোদের জীবন দেখে
পাওনা গুলো হাহা করে কলুষতা মেখে।
বয়স যখন যৌবনসুধা করে গেল পান
মঞ্চ ছেড়ে বাইজীর এখন গাছতলাতে স্স্থান।
পিতার দেওয়া সেই পেশাটি আবার নিল বেছে
জীবনযুদ্ধ চলছে বয়ে ক্ষুধার সাথে নেচে।