শিউলি গাছ এবং তার ঝরে পড়া ফুল


বিক্রম গুপ্ত


প্রতিদিন ফুল হয়ে ফুটি বলতে গেলে সারাবছর!
কতনা আমোদী ফুল আর পাতা।
'এই গাছটাকে মা' রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছিল'
মা নিজ হাতে লাগিয়েছিল টবে ছোট্টগাছ;
কর্মজীবী মানুষ প্রিয় মা...
বলতে গেলে-
কাকভোর বেলায় ঘুম থেলে উঠে সংসারের সব কাজ শেষ করে আবার সবাইকেই খাওয়াদাওয়া যার যতটুকু লাগবে খাওয়া তাদের ঠিক সেই মতো পরিবেশন করে মা চলতো তাঁর কাজে...।
বাবা কে নিয়ে আলোচ্য বিষয় নেই সেটা পরে না হয় করা যাবে-
তিনি যে থেকেও নেই!
মা নেই সবাইকে রেখে চলে গেছেন
তাঁর আগে একমাত্র ছোট ভাইটাও কেন যানি আমাদের কাছে থেকে সবার আগেই বিদায় নিল!
সবাই কেন যানি আমাদের রেখে চলে যেতে চায়
সবাই গেলেও শিউলিতলা আর শিউলি গাছ আমাদের বাড়ি ও আমাদের আগলিয়ে রেখেছে।
মা চলে যাবার আগে থেকে এই গাছে আমাদের প্রতি একধরণের বিশ্বাস, ভালোবাসা প্রগাঢ়ভাবে আহবান করতো
মনে স্বপ্নময় অনুভূতি জন্ম হতো অনেকসময়।
সেই বোনটাকে নিয়ে সাথে প্রিয় সন্তান, যাত চোখেমুখে স্বপ্নিল আকাশ দেখি।
এখনো শিউলি গাছে দিকে তাকিয়ে আকাশদেবতা দেখি;
গাছটাকে বড় ভালোবেসে এতো কাছাকাছি চলে গেলাম আমরা দুজনা হয়ে...!
প্রতিরাতে গাছটার সাথে কথা হয়; সে বলে: কত সে কথা, মাঝেমাঝে আলোচনা, গান, আবৃত্তি কিংবা নাটক ;
সময় যদিও ঠিক রাখতে পারিনা!
একদিন মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে যায়; দরজা খুলে বাইড়ে যেতেই শিউলি প্রশ্ন করে!
"আমার কষ্ট বুঝো? চমকে উঠি! একি হঠাৎ কেন প্রশ্ন?
শিউলি বলে:
আমার কষ্ট বুঝ?
তোমরা মানুষেরা এমন কেন?
শুধুই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাক?
শুধুই নিজেদের!
উত্তর কি দেবো ; ভেবেই পাইনা।
রাত শেষ হয় ফিরে আসি ঘরে
পলকহীন তাকিয়ে থাকি সন্তানের দিকে...!
সকাল হলে আবার কাজে বেড় হই।
এখন দিনের কাজ শেষে ফিরেই শিউলি গাছের তলাতে আসি
ওর প্রগাঢ় আহবান যত্নবতী ভালোবাসা নিয়ে এখনো নতুন স্বপ্নে আঁকি আগামী।
মা চলে যাওয়ার পর ছোটবোন, একমাত্র সন্তান নিয়ে প্রতিদিন হেঁটে পাড়ি দিতে ইচ্চে জাগে মনে।
এখন শিউলি অনেক বড়! অনেক পাতা, অনেক ফুল সাথে এই ভেবে এগুতে থাকে আমাদের...
স্বপ্নমুখর রাত শেষে আসে প্রথম সকাল শিউলি অনেক ফুলে বিছিয়ে রাখে আমাদের পথেরকাঁটা বিহীন রাস্তা এই পথে হেটে মা, বাবা, ভাইবোন মিলেই প্রতিদিন কতনা স্বপ্নময় পথে হেটে যাই -
যার শেষশয়নে অপেক্ষায় থাকে অপরূপ কোন স্বপ্নমানুষ
যে অপেক্ষায় ছিল হয়তো আমাদের জন্য।।


আসছে...!!!