(কিংবদন্তি অভিনেতা, নাট্যজন,
বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিকজন আলী জাকের এর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা)


মাঝে মাঝে মনে হয়
যদি মৃত্যুকে জয় করতে পারতাম
কিংবা ঠেকিয়ে দিতে পারতাম মৃত্যুকে!
জন্ম হয় আর  প্রতিমুহূর্তে ধাবিত করে যাত্রী হতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবার।


গতরাতে যখন ঘুম আসি আসি করে দিয়েছিল ফাঁকি
সকাল এনেছে সূর্য লুকিয়ে মেঘে মুখ
আর তখনই শুনলাম তুমি নেই!


চলে গেছো না ফেরার দেশে
ফিরবেনা জানি
তবুও তোমার শুণ্যতা অনুভূত হয়
একটা শুণ্যতা অনুভব করি বারবার
তুমি নেই!
নেই তুমি!!


আমাদের সাহিত্য সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রায়
তোমার পদযাত্রা বিকশিত করেছে
নাটক যে একটি 'গণমানুষের কথা বলে'
তাকে তুমি উপলব্ধি করে ছিলে
মঞ্চের ছিলে কখনো অভিনেতা কিংবা পরিচালক
কোথায় ছিলনা তোমার পদযাত্রা;
'নুরুলদীনের সারা জীবন'
এখানে আর কেউ নয়
তুমিই নুরুলদীন!
কৃষক নেতা, একজন মানুষ, একজন সংগ্রামী
যার পদচারণা আমাদের এই উত্তরাঞ্চল রংপুর।


কি নিবিড় ভাবে উপলব্ধি করেছিলে
স্বাধীনতা,
বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ,
এখানে আপসহীন তুমি
নেমে ছিলে রাজপথে সংগ্রামে বিপ্লবে-


হন্তারকের দল
যখনই আমাদের বুকের ভেতর চাপিয়েছে কৃষ্ণপক্ষ
তখনই তুমি দ্বাদশীর চাঁদের মতো
উচ্চারণ করেছো মন্ত্রের মতো করে
এনেছো আলো হাতে রেখে হাত
মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত করেছো
মশাল জ্বেলে।


তুমি অনিন্দ্য সুন্দরে
নাটকের সংলাপ হয়ে
প্রেম নিবেদন করো সৃজনে মননে
আমরা অগ্নি স্পর্শ করে তোমার সাথে মিলিয়েছি হাত
কবিতার মতো উচ্চারিত হয়ে দীপ্ত কণ্ঠে ধারণ করেছি
১৯৫২
১৯৭১
১৯৯০
বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে
তুমিও ছিলে
স্বপ্নের সারথি
জাগাতে চেতনা বিপ্লবে সাম্যে প্রগতির অগ্রভাগে।


তুমি নেই আজ সারাদিন
আকাশে উঠেনি সূর্য
কালমেঘ আর ফোটা ফোটা পুষ্প বৃষ্টি হয়েছে
পুষ্পবতী স্পর্শমাখা মন কেঁদেছে,
মাথা নত করে আকাশ দেখি আর একটা শুণ্যতা অনুভূত হয় মনে
আর তখন ভিজে যায় বুক
অশ্রুসিক্ত নয়ন।


মাঝে মাঝে মনে হয়
যদি মৃত্যুকে জয় করতে পারতাম কিংবা ঠেকিয়ে দিতে পারতাম মৃত্যুকে!