উপেন্দ্র বেনে উদাস মনে দীর্ঘশ্বাসে আকাশ পানে দৃষ্টি রাখে,
পথে চেয়ে চেয়ে চোখে স্পষ্ট অবসাদ ক্লান্তির দাগে।
দিনের আলো হৃদয়ের শূন্যতায় তাপ দিতে পারেনি,
যদিও রাতের বিষণ্ণ নিরবতা মৃত স্নায়ু নাড়িয়েছে।
চাতকেরা অপেক্ষার তৃষ্ণায় জল পেল কিন্তু
একটিও খবর এল না, খবর কবরে চিরমৃত।


সেই কবে একমাত্র ছেলে ছেড়েছিল বাড়ি,
শোভিত স্বপন করতে পূরণ ভূমধ্যসাগরের ঘাতক বুক দিয়েছিল পাড়ি।


অজানা দেশের অচেনা পথে চির অদেখা হল ছেলে,
বাবা ভাবে এ জীবনে দু'নয়নে আর কি দেখা মিলে?


কখনো ভাবে ছেলে অভিমানে রয়েছে ভুলে,
কখনো ভয় মনে হয় উদয় মরে গেছে পঁচে। না না,
এমন হতে পারে না।
শিহরিত শরীরে অশ্রুসিক্ত নজরে
চিৎকারে বলে ছেলে আমার বড্ড অভিমানী,
বাবা ছেলের অভিমান সত্য কর, হে অধিকারী।


চোখের জলে আবেগ পুড়ে পরান ভেঙে ভেঙে,
মনে আসে বারংবার ছেলে আমার কবেকার থাকত মোর সঙ্গে সঙ্গে।


প্রতিবেশী স্বজন করে আগমন শান্তকরণ হয় বিসর্জন,
দুরুদুরু বুক মনে অসুখ বাবার পৃথিবীর সর্বদিক নির্জন।


ষাট বছর জীবনে মরণ স্মরণে স্মরণে চলেছে বছর বিগত ছয়,
এ বয়সে শুকনো দেহে সন্তান বিয়োগের দাগ মরণের পরও রয়।


বাবা বলে, আমি অপরাধী তাড়াতে টানাটানি হারালাম চুনি,
হবে এমন শুরুতে এলে স্মরণ করতাম বারণ ধরতাম চরণ তখনি।



উৎসর্গঃ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যেতে পানিতে ডুবে অনেকেই মারা যান। সেই সন্তান হারা বাবাদের প্রতি উৎসর্গীকৃত।