প্রেমের রুমান্টিক (গদ্য কবিতা)
ফেইসবুক প্রেম,,(নওশাদ আলম)


ফেইসবুক,ই-বুক,কিংবা নিজবুক প্রেমতো প্রেমই। যেখানে আত্মা ও মনুষ্যত্বের বাস, প্রকৃত প্রেমের আসনও সেথায়।
মুঠো ফোনটাকে এখন আর জড় পদার্থের কুটায় না ফেলে, জীবন বললে ও ভূল হবেনা।  কেন না জীবন দিয়েই তো জীবনের সম্পর্কের রশিটা অটুট রাখা যায়।  
সারাদিন ফেইসবুকে রুমান্টিক চ্যাটে মত্ত্ব থাকতাম। এতে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলোকে গলাটিপে হত্যা করতাম। মাঝে-মাঝে মনে হত, ফোনের স্কীনের দিকে তাকিয়ে থাকার জন্যই বুঝি আমার জলজল নয়নের জন্ম? নয়নের বিস্তৃর্ত গগণে চৌতির মিষ্টি সূর্যের কিরণ ছাড়া, অন্য কোন সূর্য বা নক্ষত্রের আলোর ছাঁটা নেত্র প্রদেশে কখনোই পড়েনা। আমি সামান্য ফোনের পিছনে এত সময় ব্যায় করতাম বলে নৃত্যদিনই মায়ের মুলায়েম বকুনীতে পেট ভরতো।
বাবাটা অবশ্যই আমার দলকেই ভারি রেখেছিল।  আমার প্রতি মায়ের কথার ঝড় উঠলে, বাবা আমাকে রক্ষা করত ঢাল হয়ে।
বাবা বলত এই বয়সে প্রেমনা করলে কখন করবে? আমার মত চুল দাড়ি সাদা হলে?
মা তখন বাবার প্রতি ভিষণ খ্যাপা হয়ে উঠত।
একদিন চ্যাটে আমার মিষ্টি প্রেমিকা চৌতি,আমার সাথে দেখা করার জন্য তাঁর অদৃশ্য জেজকে ভিষণ ভাবে পশ্রয় দিলো।
কালকে নাকি আমাকে নিয়ে সারাটা দিন কোন এক  দৃষ্টিকাড়া স্থানে সৌন্দর্যে জলে, হাতে হাত রেখে ভিজবে। গোধূলির রঙে সবুজ দুবলোর মসনদে বসে, আমার মাথাটা কোলে রেখে। আদর করতে করতে  চৌতির নাকি হারিয়ে যাবার স্বপ্ন জাগে অজানা পৃথিবীর গন্তব্যে।
আমি অবশ্যই  না করতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু আমি তাঁর কমল বুলির কাছে পরাজিত সৈনিকের মত  আত্মসমর্পণ করে ফেলেছি অজানতেই। রাতটা তো আজকেও অন্যান্য দিনের মত কালো দেহনিয়ে হাজির হয়েছে সম্মুখে!
তবে কেন নেত্রতটে ঘুমের নাউ আমার তটে  নোঙড় করছে না?
তবে কেন বার বার দৃষ্টিপথে চৌতির প্রফাইল পিকচার আলিঙ্গন করছে আমার অবুঝ হৃদয়কে ?
সকালটা হতেই দেখি অচেনা নাম্বার মুঠো ফোনটাকে রাগিয়ে তুলেছে। তখনও আমি ঘুমের মাঝেই লুকিয়ে ছিলাম। আলতো করে হাতটা বাড়িয়ে,
তাকে শান্ত করতেই,ভেসে এল চির চেনা চৌতির মিষ্টিস্বর।
মিষ্টি স্বর শ্রবণদ্বারে পৌছাতেই মনের জির্নকুঠিরে জাগ্রত হলো রাতে রুমান্টিক চ্যাট।
ততক্ষণে শ্রবণদ্বার কাঁপিয়ে তুলেছে মিষ্টি কিছু ভাষণে।
তারপর তাড়াহুড়া কাকে বলে না দেখলে কোন মতেই বোঝানো সম্ভব নয়।
অবশেষে যানবাহনের জ্যামের লম্বা বহর পেরুতেই । সময়ের চাকা ক্রমশেই ডিগবাঝি মারছে।
অনেক ক্লান্তি স্বীকার করে
চৌতির অপেক্ষারত লেকের বুকে পা ফেললাম।
তখন লেকের জলের স্রোত গুলো রোদ্রুর সাথে লুকোচুরি খেলছিলো।
আমাকে দেখেতো চৌতি বাতাসের বেগে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো। তখন চারিপাশে  নির্লজ্জ বৃক্ষগুলো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখছিলো, আমাদের ভালবাসার রুমান্টিক দৃশ্য।
সেদিনটাকে কোন  ক্রমশেই ভূলবার নই। হৃদয়ের গ্রিনিজ বুকের পৃষ্ঠা ভরে রয়েছে চৌতির মিষ্টি চ্যাট আর মধুর ভালবাসা।